UsharAlo logo
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অটোপাশের সম্ভাবনা কম, ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী যে বিষয়ে ফেল

usharalodesk
অক্টোবর ২৬, ২০২৪ ৬:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট :  চলতি বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের একটা অংশ অটোপাশের দাবিতে বিভিন্ন বোর্ডের সামনে আন্দোলন করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা স্থগিত হয়। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অনেক শিক্ষার্থী শহিদ হন। অনেকে গুলিবিদ্ধ হন। আবার অনেকে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে ৫ আগস্টের পর স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে কিভাবে ফলাফল দেওয়া হবে তা নিয়েও সিদ্ধান্ত দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। যেসব বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন ও যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি সেগুলোর পরীক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের বিষয় ম্যাপিং করে ফল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। ১৫ অক্টোবর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়। ফেল করে প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী। ফেল করা শিক্ষার্র্থীদের একটা অংশ অটোপাশের দাবিতে আন্দোলনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সব বিষয়ের ওপর সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফলাফল চায়। এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই সব সাবজেক্ট ম্যাপিং করার দাবি তাদের। তবে তাদের এসব দাবি মানতে নারাজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে অকৃতকার্যদের অনেকেই ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছে। উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণ করে ফলাফলে পরিবর্তন এলে তা নতুন করে প্রকাশ করা হবে। ফলে তারা যে অটোপাশ বা সব বিষয়ে সব সাবজেক্ট ম্যাপিং চেয়েছিল সেটি কার্যকর হচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, এইচএসসি ও সমমানের প্রকাশিত ফলাফল পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে স্পষ্ট বলে দিয়েছে। এছাড়া তাদের দাবিও অযৌক্তিক। তবে যারা ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছে, তাদের নিয়মানুযায়ী ফল বিবেচনা করা হবে। এতে ফলাফলে কোনো পরিবর্তন এলে, সেটি নতুন করে প্রকাশ করা হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রকাশিত ফলাফল বৈষম্যমূলক। তারা সব বিষয়ের ওপর সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফলাফল চায়। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই এইচএসসির সব সাবজেক্ট ম্যাপিং করে পুনরায় ফল প্রকাশের দাবি তাদের।

অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল হক দুলু  বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পুনরায় ফল প্রকাশের দাবি অযৌক্তিক। এসব মনগড়া দাবি পূরণ করতে থাকলে শিক্ষায় নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে। এছাড়া যেসব শিক্ষার্থী ভাঙচুর ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে সেটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকাশিত ফলাফল সবার মেনে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ ন ম সামসুল আলম বলেন, এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যেসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ফেল করেছে, তাদের আন্দোলন করা উচিত নয়। তাদের প্রকাশিত ফলাফল মেনে নেওয়া উচিত। আগামীবার যেন ভালো করতে পারে, সেই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। প্রকাশিত ফলাফল পুনরায় প্রকাশ করা কোনো যৌক্তিক দাবি নয়।

এদিকে ১৭ অক্টোবর এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের দাবি নিয়ে একটি লিখিত বিবৃতি বোর্ড চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেয়।

রোববার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ভেতরে ঢুকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ফল প্রকাশের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে একদল অকৃতকার্য শিক্ষার্থী। এদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এ সময় অবরুদ্ধ ছিলেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের দাবিতে পদত্যাগ করার ঘোষণাও দেন তিনি। বুধবার অবৈধভাবে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষার্থী। এদের অনেকেই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফেল করেছে। এ সময় তারা এসএসসির ফলাফল মূল্যায়নের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার বৈষম্যহীন ফলাফল প্রকাশের দাবি জানায়। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৬ জনকে শাহ্বাগ থানায় করা একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

ঊষার আলো-এসএ