ঊষার আলো রিপোর্ট : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের এক আবাসিক ছাত্রকে হল থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী মাহাদী হাসান ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্তরা হলেন- বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম তরুন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ফাহিম ফয়সাল ও বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাজু। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাহাদী লালন শাহ হলের ৪২৮নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তরুন, ফাহিম ও রাজু ৪২৭নং কক্ষে ডাকেন। সেখানে আগে থেকে অভিযুক্তরা অপেক্ষা করছিলেন। কক্ষে ঢুকতেই ফাহিম মাহাদীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এ সময় মাহাদী তার সিটে থাকতে চান। রাজু তাকে ধমক দিয়ে বলে- তুই কে? তোকে আগে কখনো হলে দেখিনি। কে তোকে হলে তুলেছে? আর ওইসব আবাসিতার কাহিনী বাদ দে। আমরা যা বলবো হলে তাই হবে।’
তখন তরুন মাহাদীকে বলেন, ‘আমাকে চিনিস তুই, আমি কে? এখনও ভালই ভালই বলছি, ৪২৮ থেকে সবকিছু নিয়ে কোথায় যাবি যা। ৩০৮ এ থাকবি নাকি কোথায় থাকবি আমরা জানিনা। একথা বলে তারা মাহাদীর বই, খাতা, তোষক ও বালিশ কক্ষের বাইরের করিডোরে ফেলে দেয় এবং বলে এখানে তোর সবকিছু আছে নিয়ে চলে যাস।’
ভুক্তভোগী ওই ছাত্র জানান, ছাত্রলীগ কর্মী নুরুজ্জামান খান সাগরের মাধ্যমে প্রথমে হলের গণরুমে ওঠেন। পরে অতিথি হিসেবে ওঠেন ৩০৮ নম্বর কক্ষে। সেখানে থেকে ছাত্রলীগের সব মিছিল মিটিংয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতেন। পরবর্তীতে ৪২৮ নম্বর কক্ষে আবাসিকতাপ্রাপ্ত হলে সেখানে উঠার চেষ্টা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্তরা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী। তারা ওই হলের হলের সিট নিয়ন্ত্রণ করেন।
তবে ফাহিম ফায়সাল জানান, সে আগে সাগর ভায়ের সঙ্গে রাজনীতি করতো। তাকে আমরা এখন মিছিল মিটিং-এ পায় না।
অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে তিনি বলেন, সে অন্য এক ছেলের সিটে থাকতো। আমরা উভয়ের মধ্যে মিউচুয়াল করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, যে হলে উঠেনি তাকে সিট থেকে নামানোর প্রশ্নই ওঠে না। আমরা কোনো আবাসিক ছাত্রকে হলে উঠতে বাধা দেয় না। বরং বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, এটি আবাসিক হলের ঘটনা সে জন্য প্রথমে হল প্রভোস্ট, প্রভোস্ট কাউন্সিল বিষয়টি দেখবে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাদের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হলে তখন ছাত্র উপদেষ্টাকে মাধ্যম করে প্রক্টর বরাবর লিখিত দিতে বলেছি। তখন আমরা বিষয়টি দেখব, যেহেতু এটা হলের বিষয় হল প্রশাসন আগে দেখবে।
লালন শাহ হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে বসে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ঊষার আলো-এসএ