মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘সরকার পরিবর্তন’ শব্দটি ব্যবহার করা রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয় বলা হলেও, যদি বর্তমান ইরানি সরকার ইরানকে আবার মহান করে তুলতে না পারে, তবে (ইরানে) সরকার পরিবর্তন কেন হবে না?’
এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সকালে এক বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে জানান, ‘এই অভিযান কখনোই সরকার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়নি, এখনো তা নয়।’ এছাড়া ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স রবিবার মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল এবিসিকে বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই সরকার পরিবর্তন চাই না। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ইতি টানা।’
এই ‘সরকার পরিবর্তন’ ইস্যুটি ট্রাম্পের নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেই বিতর্ক ও মতপার্থক্যের জন্ম দিয়েছে।
রিপাবলিকান দলের পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০৩ সালে ইরাকে সরকার পতনের লক্ষ্যে সামরিক অভিযান শুরু করেন, যেটি গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়েছিল। পরে প্রমাণিত হয়, সেসব অস্ত্রের অস্তিত্বই ছিল না।
মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি সামরিক জড়িয়ে পড়া এবং সরকারের পরিবর্তনের মতো নীতির প্রতি রিপাবলিকান ভোটারদের বিরূপ মনোভাব তৈরি হয় ওই অভিজ্ঞতার পর। ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ক্ষোভকে পুঁজি করে ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘আর কোনো নতুন যুদ্ধ নয়।’
তবে বর্তমানে রিপাবলিকান দলে এখনো সক্রিয় রয়েছেন কট্টর জাতীয় নিরাপত্তাবাদী রাজনীতিক ও ইসরাইলপন্থি নেতারা, যারা ইরানবিরোধী হামলাকে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছেন।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর হামলা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য কেবল একটি বৈদেশিক নীতি নির্ধারণ নয়, বরং দেশের ভেতরের রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার একটি কৌশলও। একদিকে তাকে যুদ্ধবিরোধী ভোটারদের আশ্বস্ত করতে হচ্ছে, অন্যদিকে সামরিক হস্তক্ষেপে বিশ্বাসী শক্তিগুলোকেও সন্তুষ্ট রাখতে হচ্ছে।
এখন ট্রাম্পের ‘সরকার পরিবর্তন’ ঘিরে মন্তব্য তার নিজের প্রশাসনের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থানে দাঁড়াচ্ছে এবং পুনরায় উসকে দিচ্ছে বুশ যুগের বিতর্কিত নীতির স্মৃতি।
ঊষার আলো-এসএ