UsharAlo logo
রবিবার, ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কচুরিপানায় স্বাস্থ্য, ত্বক ও চুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান

usharalodesk
জুন ২০, ২০২১ ২:৫০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : পানিতে ভেসে থাকা জলজ উদ্ভিদ কচুরিপানা। এর সবুজ গাছ ও বেগুনি বা নীলচে রঙের ফুল সবাইকেই মুগ্ধ করে। জানেন কি? পানি পরিশুদ্ধিকরণে এই জলজ উদ্ভিদ কতটা উপকারী। এমনকি স্বাস্থ্য, ত্বক ও চুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান রয়েছে এই কচুরিপানায়।
এশিয়া মহাদেশের অনেক অঞ্চলের খাবারের মেন্যু দখল করে রেখেছে কচুরিপানা। এটি সিদ্ধ করে নানা পদে রান্না করা হয়। এটি শুধু একটি স্বাস্থ্যকর খাবারই নয় এটি সুপার ফুড হিসেবেও বিবেচিত। কারণ এতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগুণ আপনার শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে। ২১০ গ্রাম কচুরিপানায় রয়েছে-
৭২২ ক্যালোরি, ফ্যাট ৪ গ্রাম, সোডিয়াম ৪৪ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১২৮ গ্রাম, প্রোটিন ৫০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭ শতাংশ ও আয়রন ৫৯ শতাংশ।
জেনে নিন এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে-
১. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
কচুরিপানা ত্বকের বিভিন্ন কালচে দাগ এমনকি রোদে পোড়া ভাবও কমিয়ে দিতে পারে। এর রস ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বক কোমল ও মসৃণ হয়। জানেন কি? আজকাল অনেক নামী দামী ব্র্যান্ডের প্রসাধনীতে কচুরিপানা প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
২. একজিমা সারাতে
একজিমা হলে ত্বক চুলকায়, শুষ্ক হয় এবং আক্রান্ত স্থানটি লাল হয়ে যায়। এমন সময়ে ভরসা রাখুন কচুরিপানায়। এতে থাকা প্রদাহবিরোধী উপাদান একজিমা সারাতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থানে কচুরিপানা বেটে ব্যবহার করুন।
৩. ভ্যালো শ্যাম্পু
কচুরিপানা চুলের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। আপনি চাইলেই জলজ এই উদ্ভিদের রস চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে চুল তো পরিষ্কার হবেই পাশাপাশি ঝলমলে ও কোমল ভাব আনবে। চাইলে কচুরিপানার রস এসেনশিয়াল অয়েল বা আমন্ড অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন।
৪. দাঁতে ব্যথা কমায়
কচুরিপানার পাতায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান দাঁত ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। কচুরিপানার কয়েকটি পাতা পানিতে ফুঁটিয়ে গার্গেল করুন। দাঁতের ব্যথা মুহূর্তেই কমে যাবে।
৫. গলা ব্যথা কমায়
দাঁত ব্যথার মতোই গলা ব্যথাতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে কচুরিপানা। এতে থাকা প্রদাহবিরোধী উপাদান গলার বিভিন্ন সংক্রমণ দূর করে ব্যথা কমায়। এক্ষেত্রে কচুরিপানার পাতা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি পান করুন।
৬. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে
কচুরিপানায় রয়েছে হাইপোকোলেস্টেরোলেমিক উপাদানসমূহ। যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এক্ষেত্রে নিয়মিত কচুরিপানা সিদ্ধ করা পানি পান করতে পারেন। পাশপাশি এর বিভিন্ন পদ রান্না করেও খেতে পারেন।
৭. মাতৃদুগ্ধ বাড়ায়
কেনিয়ার নারীরা মাতৃদুগ্ধ বাড়াতে কচুরিপানা ব্যবহার করে। তারা কচুরিপানার পাতা ফুটিয়ে সেই রস নিয়মিত পান করেন। এমনকি সেখানকার নারীরা অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা সমাধানে কচুরিপানার ফুলের রস বা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি পান করে থাকে।
৮. ওজন কমায়
এতে রয়েছে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার। যা ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কচুরিপানার পাতা ফুটিয়ে চায়ের মতো পান করলে ওজন দ্রুত কমবে।
৯. রক্তক্ষরণ বন্ধ করে
অনেকেরই কেটে গেলে রক্তপাত বন্ধ হয় না। তাদের ক্ষেত্রে কচুরিপানা বেশ কার্যকরী এক উপাদান। এতে রয়েছে অ্যামিনো এসিড। যা রক্তক্ষরণ বন্ধে কাজ করে।
সতকর্তা:
হাজারো উপকার থাকা স্বত্ত্বেও এই জলজ উদ্ভিদটি কখনো সিদ্ধ না করে খাবেন না। এতে করে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সিদ্ধ করে কিংবা ভেজে এটি নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। যারা সর্দি কাশিতে ভুগছেন তারাও কচুরিপানা ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন।

(ঊষার আলো-এম.এইচ)