ঊষার আলো ডেস্ক : ঈদের ছুটি শেষে এখন কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। ঈদের আগে নিজ ঘরে ফেরার জন্য মানুষ কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছিল তা ফেরির জন্য অপেক্ষমাণ জনস্রোতেই স্পষ্ট হয়েছে। লকডাউনজনিত বিধিনিষেধ, অতিরিক্ত ভাড়া এমনকি অবর্ণনীয় ভোগান্তি সব কিছু উপেক্ষা করে মানুষ বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছে। ঈদের ছুটিতে কেন বাড়ি ফেরা মানুষের ঢল নামে সেটা বহুল আলোচিত।
লকডাউনজনিত বিধিনিষেধের ফলে ফেরি পারাপার এবং লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ রাখার চেষ্টা করা হলেও যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর রাখা সম্ভব হয়নি। আমরা দেখেছি বাড়ি ফেরার পথে ফেরিতে প্রচণ্ড ভিড় এবং হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে একদিনেই ৫ জন মারা গেছেন ও আহত হয়েছেন অনেকে। বস্তুত দূরপাল্লার যানবাহনগুলো বন্ধ থাকার ফলেই ফেরির ওপর এতটা চাপ পড়েছিল।
উদ্বেগজনক বিষয় হলো বাড়ি ফেরা যাত্রীদের অনেকেই কোনও প্রকারের স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে দলে দলে ছুটেছিল প্রিয়জনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে। এভাবে দেশে করোনা পরিস্থিতি কী ভয়ানক আকার ধারণ করার আশঙ্কা আছে, সেটি অনেকদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। ছোট গাড়ি, মাইক্রোবাস বা ছোট ট্রাকের পেছনে গাদাগাদি করে বসে অনেকে বাড়ি ফিরেছিল। এভাবে বাড়ি ফেরা বিপজ্জনক জেনেও অনেকে ঝুঁকি নিয়েই বাড়ি ফিরেছিল সে সময়।
আসলে মানুষের এতদিনের অভ্যাস দু-একদিনে বদলানো সম্ভব না। কর্মস্থলে ফেরার মতো পর্যাপ্ত অর্থও যে অনেকের হাতেই এখন নেই, সেটিও বহুল আলোচিত। এমন অবস্থায় মানুষ যাতে স্বস্তিতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মস্থলে ফিরতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে সাময়িকভাবে হলেও দূরপাল্লার যানবাহনগুলো চালু করা দরকার। কারণ স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মানুষ যেভাবে বাড়ি ফিরেছে পুনরায় একই ধরণের দৃশ্যের অবতারণা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
করোনার ভারতীয় যে ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে সমগ্র বিশ্ব উদ্বিগ্ন তা এবার বাংলাদেশেও শনাক্ত করা হয়েছে। জানা যায়, ভারতের ভ্যারিয়েন্টটি খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ ভ্যারিয়েন্টের কারণে একজন থেকে প্রায় ৪০০ জন আক্রান্ত হতে পারে। ভারতে এখন প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে হাজারো মানুষ।
এখন এ সংক্রান্ত যথাযথ পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা না হলে দেশে করোনা পরিস্থিতি যে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে, সেটি আসলে বলাই বাহুল্য।
(ঊষার আলো-এফএসপি)কর্মস্থলে ফিরছে মানুষের ঢল