UsharAlo logo
বুধবার, ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কারাগারে সাবেক আইজিপি শহীদুল

ঊষার আলো
সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪ ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট :  বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হককে রিমান্ড শেষে শুনানি না করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বাসায় বসেই এ আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার।

মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে। এদিন সকাল ৭ টায় রিমান্ড শেষে শহীদুল হককে আদালতে আনা হয়। এসময় তাকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের হাজত খানায় রাখা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৭ টায় সাবেক আইজিপি শহীদুল হককে রিমান্ড শেষে ডিবি অফিস থেকে আদালতে আনা হয়। এসময় তাকে হাজত খানার রাখা হয়। এসময় আদালতে পুলিশ তাকে আদালতে উঠানোর প্রস্তুতি নিতে থাকে। এরমধ্যেই মোটরসাইকেল যোগে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা বিচারকের বাসায় গিয়ে কাস্টডি ওয়ারেন্টর স্বাক্ষর নিয়ে আসেন। এরপর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর হাজতখানা থেকে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন বলেন, এখানে যা হয়েছে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে। কারণ উনি যেহেতু রিমান্ডে ছিল। রিমান্ড শেষে আদালতে উপস্থিত করতে হয়। এরপর আমরা জামিন চাইবো, চিকিৎসার জন্য ডিভিশন চাইবো। সেই অনুযায়ী আমরা পিটিশন দিবো। তারপর আদালত আদেশ দিবেন। আমরা সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলাম। আমাদের সেই সুযোগই দেওয়া হল না। পরবর্তীতে আমরা দেখলাম উনাকে কোর্টে উঠানো হয় নাই। কাস্টডি ওয়ারেন্ট মূলে কারাগারে পাঠানো হলো।

তিনি বলেন, তাকে কোর্টে পাঠানো হয়নি। ম্যাজিস্ট্রেট বাসায় বসে আদেশ দিয়ে দিয়েছেন। আমরা শুনানি করতে পারিনি। আমাদের শুনানি করা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এখানে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে।

ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি মো নজরুল ইসলাম বলেন, আজকে উনার কোন রিমান্ড শুনানি ছিল না। আমাদের বলা হয়েছে উনার রিমান্ড চাওয়া হবেনা। এ কারণে কাস্টডি ওয়ারেন্ট করা হয়েছে।

শুনানি না করতে পারায় আইনজীবীদের বঞ্চিত করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমরা ত ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়েই আসামিকে পাঠিয়েছি। আমি এতটুকুই  বলতে পারি এটা প্রোপারলিই হয়েছে।

বাসায় বসে আদেশ দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নাই। এটা ম্যাজিস্ট্রেট বলতে পারবেন।

এর আগে গত বুধবার সকালে তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামান।

গত ১৯ জুলাই বিকেল ৫টায় নিউমার্কেটের ১নং গেটের সামনে গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। নিহত ব্যবসায়ীর ভাগনি জামাই আব্দুর রহমান বাদী হয়ে গত ২১ আগস্ট নিউমার্কেট থানায় এ মামলা করেন।

মামলার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব চৌধুরী জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ প্রমুখ।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯ জুলাই বিকেল ৫টায় নিউমার্কেটের ১নং গেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল চলছিল। এসময় কিছু আসামির যোগসাজশ ও উসকানিমূলক বক্তব্যে ও সরাসরি নির্দেশে নিরপরাধ মানুষের ওপর গুলি করা হলে ঘটনাস্থলে মাহফুজুর রহমান, নাসির উদ্দিন, শামীম উসমান, মো. আবু মূসা, মাঈনুদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, আবির হোসেনসহ অনেক নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা ও সাধারণ পথচারী আহত হন। আব্দুল ওয়াদুদ (৪৫) নিউমার্কেট থানার প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরার পথে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঊষার আলো-এসএ