বিমল সাহা : খালিশপুরে অবস্থিত খুলনা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে নির্মিতব্য ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টে কর্মরত চীনা নাগরিকদের মধ্যে করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আক্রান্ত ৩৭ জনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। খুলনা জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়মিত দেখভাল করছেন।
সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার (২৪ মে) খালিশপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৩ জন চীনা নাগরিকের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মঙ্গলবার (২৫ মে) তাদের রিপোর্টে পুনরায় ২৯ জনের করোনা পজেটিভ ধরা পড়লেও বাকী ৩৪ জনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এর আগে গত ২০ মে আরও তিনজনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। ফলে প্রকল্পে কর্মরত চীনাদের করোনা আক্রান্তের হার কমতে শুরু করেছে। গত একমাসে প্রকল্পে মোট ৮৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিল। এরমধ্যে তিন ধাপে নমুনা পরীক্ষায় মোট ৫৬ জন করোনা নেগেটিভ শনাক্ত হয়েছেন। বর্তমানে প্রকল্পটিতে এখনও ২৯ জন করোনা আক্রান্ত রয়েছে।
খালিশপুর এই বিদ্যুৎ প্রকল্পে মোট ১৮৫ জন চীনা নাগরিক কর্মরত আছেন। এক মাসে (১৮ এপ্রিল থেকে ১৮ মে) সকলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে মোট ৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। যার মধ্যে গত ১৮ মে ৪২ জনের করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। এঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে প্রকল্পে কর্মরত বাঙালি শ্রমিকসহ আশপাশের সাধারণ মানুষ। এ সংক্রান্তে দৈনিক প্রবাহে সংবাদ প্রকাশের পর খুলনা জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিষয়টি আমলে নেন। এরপর প্রকল্পে কর্মরত বিদেশী নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সেখানে অধিক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, চাইনিজদের মাঝে করোনা প্রকোপ শুরু হলেও দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ার আগেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ফলে অতি অল্প সময়ে তারা করোনা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। বাকী যারা এখনও আক্রান্ত রয়েছে তারাও দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, আক্রান্তরা প্রত্যেকে আলাদা কক্ষে আইসোলেশনে রয়েছেন। আক্রান্তরা কেউই কাজে অংশ নেন না। তাদের নিজস্ব চিকিৎসক রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই অত্যন্ত সচেতন।
খুলনার সিভিল সার্জন নেওয়াজ মোহাম্মদ জানান, সোমবার (২৪ মে) আক্রান্ত ৬৩ জন চীনা নাগরিকের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মে) তাদের মধ্যে ৩৪ জনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। বাকী ২৯ জনের পজেটিভ এসেছে। নিয়মিত তাদের খোজ রাখা হচ্ছে। আক্রান্ত সকলের আইসোলেশন নিশ্চিত করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, আক্রান্ত চীনা নাগরিকদের আইসোলেশ নিশ্চিত করতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে আক্রান্ত কেউই যেন বাইরে বের হতে না পারেন। করোনা যেন ছড়াতে না পারে সেজন্য তাদের ওপর নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।
(ঊষার আলো-এমএনএস)