UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাছি-ভোক্তাকে উদ্বুদ্ধ করতে গুড়মেলা শুরু

usharalodesk
জানুয়ারি ৩০, ২০২৪ ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : যশোরের যশ খেজুরের রস। দীর্ঘদিন ধরেই প্রচলিত এই কথার পাশাপাশি যশোরের খেজুর রস-গুড়ের রয়েছে কয়েকশ বছরের ঐতিহ্য। তবে সময়ের পরিক্রমায় এই ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তির পথে। খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রেখে তা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই যশোরের চৌগাছায় দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করা হয়েছে তিন দিনের খেজুর গুড়মেলা।

সোমবার দুপুরে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে গুড়মেলা উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চৌগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তানিচুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস, চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল, চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলসারা ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী মাসুদ চৌধুরী, কলামিস্ট মিজানুর রহমান প্রমুখ। গুড়মেলায় চৌগাছা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভার একটি করে স্টল বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মৃধাপাড়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি বিভিন্ন প্রকারের পিঠার দুটি স্টল দিয়েছেন। এছাড়া স্কাউট সদস্যরা মেলায় রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করে বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন।

মেলায় অংশ নেওয়া হাকিমপুর ইউনিয়নের স্বরূপপুর-চাকলা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তিনি ১২০ কেজি গুড় নিয়ে এসেছিলেন। মেলায় ৪০০ টাকা কেজি দরে গুড় বিক্রি করেছেন। পাতিবিলা ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের গাছি জামাত আলী বলেন, আমি ৬০ বছর ধরে গাছ কাটি (রস সংগ্রহ করি)। রস গুড় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছি। আমরা মারা গেলে ছেলেপেলে কেউ গাছ কাটবে না। এটা অনেক কষ্টের কাজ। এই যুগের ছেলের শিখতে চায় না।

মেলায় অংশ নেওয়া সিংহঝুলি ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের গাছি আনিছুর রহমান বলেন, খেজুর গাছ দিন দিন কমে যাচ্ছে। খেজুর গুড় খাওয়া মানুষ বাদ দিয়েছে। কিন্তু এই খেজুর গুড় হতে পারত চিনির বিকল্প খাদ্য।

মেলায় আসা আজিজুর রহমান বলেন, দুই বছর ধরে চৌগাছায় খেজুর গুড়ের মেলা হচ্ছে। এতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। খেজুর রস ও গুড়ভিত্তিক অর্থনীতি চাঙা হয়েছে। একই সঙ্গে খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম জানতে পারছে।

চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা বলেন, খেজুর গাছের মালিক বা গাছিরা একসময় হতাশ হয়ে গাছ কেটে ফেলতেন। ইটভাটার জ্বালানি হিসাবে খেজুর গাছ বেচে দিতেন। অনেকে খড়ি হিসাবে ব্যবহার করছেন। খেজুর গুড়ের শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। ঐতিহ্য রক্ষার উদ্যোগ হিসাবে মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

যশোরের জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, যশোরের খেজুর রস গুড় আমাদের ঐতিহ্যের একটি অংশ। এই ঐতিহ্যকে ধারণ ও লালন করার জন্য উপজেলা প্রশাসন গুড়মেলার আয়োজন করেছে। মেলার মাধ্যমে ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঊষার আলো-এসএ