গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে জীবন বাজি রেখে অংশ নেওয়া রাকিব ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি পাননি। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়া সত্ত্বেও তার নাম গেজেটভুক্ত হয়নি সরকারের প্রকাশিত গেজেটে।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট রাকিব তার পরিবারের কাউকে না জানিয়ে তার বন্ধুদের সঙ্গে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। ওইদিন সকাল ১০টার দিকে কারফিউ উপেক্ষা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাভার মডেল থানার সামনে গেলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ রাকিবের মাথায় রাইফেল দিয়ে আঘাত করলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। তখন তার ‘পায়ে রাইফেল ঠেকিয়ে গুলি করে পুলিশ’। রাকিবকে দ্রুত সাভার এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। পরে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নেওয়া হয় তাকে।
রাকিবের বাবা মো. রফিক অভিযোগ করে বলেন, রাকিবের যাবতীয় চিকিৎসাপত্রসহ সব কাগজপত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ভারপ্রাপ্ত) কাছে জমা দিয়েছিলাম। এছাড়া সার্জন অফিসে জমা দিয়েছি। তারপরও আমার ছেলের নাম গেজেটে আসেনি। আমার ছেলে নাকি তদন্তে বাদ পড়েছে। তিনি আক্ষেপ কর বলেন, যারা তালিকা ভুক্ত হয়েছে তারা তো কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি।
সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে জরাজীর্ণ দুটি ছাপড়া ঘর। তাতেই তাদের যৌথ পরিবারের সবাই একত্রে বাস করে। পরিবারে সবার মুখে দেখা যায় দারিদ্রের মলিন ছাপ।
রাকিব বলেন, কষ্ট করেই বড় হয়েছি। দেশকে ভালোবাসি। দেশের জন্য জীবন দিতে পারতাম।
রাকিরেব মা বলেন, পুলিশ ছেলের মাথা ফাটিয়েছে, পায়ে গুলি করছে। অনেক রক্ত ঝরাইছে আমার ছেলের।
রাকিবকে জুলাই যোদ্ধা হিসাবে গ্যাজেটভুক্ত করা দাবি জানিয়ে মানিকগঞ্জ মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক মো. শান্ত মির্জা বলেন, ওর কাগজপত্র জমা দেওয়া সময় আমরা সঙ্গে ছিলাম। ওর নাম তালিকায় না আসার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
রাকিবের নাম গেজেটভুক্ত না হওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিয়ান নুরেন বলেন, ওই সময় আমি ছুটিতে ছিলাম। তবে তার যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিলে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানাব।
ঊষার আলো-এসএ