UsharAlo logo
শনিবার, ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাল পাসপোর্ট বানিয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেছিলেন লাশ পোড়ানোর নির্দেশদাতা কাফী

ঊষার আলো ডেস্ক
অক্টোবর ৬, ২০২৪ ৮:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমন করতে যে কয়জন পুলিশ কর্মকর্তার নাম বেশি আলোচনায় এসেছে তাদের অন্যতম ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহীল কাফী। সাভারে লাশ পুড়িয়ে গুম করার ‘নির্দেশদাতা’ হিসেবে এসেছে তার নাম। জানা যায়, সরকার পতনের  পর দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

এজন্য সরকারি পাসপোর্ট থাকতেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে একদিনে সাধারণ পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন তিনি। জালিয়াতি করে পাসপোর্ট পেলেও গত ২ সেপ্টেম্বর দেশ ছাড়ার সময় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। একাধিক মামলায় কারাগারে থাকা কাফীকে চাকরি থেকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২৯তম বিসিএসের পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা কাফী সরকারি পাসপোর্টধারী ছিলেন। কিন্তু লাশ পুড়িয়ে ফেলার ভিডিও নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে নিরাপদে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। এজন্য পাসপোর্ট অধিদপ্তের উপপরিচালক পদে কর্মরত তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর শরণাপন্ন হন তিনি।

অভিযোগ আছে, তার পরামর্শ ও সহযোগিতায় পাসপোর্ট পেতে নিজেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের স্প্রে-ম্যান সুপারভাইজার পদবি ব্যবহার করেন চতুর এই পুলিশ কর্মকর্তা।

জানা যায়, বন্ধুর পরামর্শ অনুযায়ী স্প্রে-ম্যানের সুপারভাইজারের চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়ার অফিস আদেশের চিঠি ফটোশপ করে আব্দুলাহীল কাফী বসিয়ে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করেন।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, কাফীর সেই পরিচিত কর্মকর্তা অত্যন্ত দ্রুততা ও গোপনীয়তার সঙ্গে আবেদন নিজে গ্রহণ না করে একজন ডিএডিকে দিয়ে জমা করান। আবেদনটি সুপার এক্সপ্রেস হিসেবে জমা হয় গত ১৫ আগস্ট। একদিন পর অর্থাৎ ১৬ আগস্ট কাফী পাসপোর্ট হাতে পান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৬ আগস্ট সাধারণ পাসপোর্ট হাতে পেয়ে দেশ ছাড়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন কাফী। এর আগে পুরোপুরি আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। পরে সাধারণ পাসপোর্টে ভিসা লাগিয়ে ২ সেপ্টেম্বর বিমান বন্দর দিয়ে পালানোর সময় ধরা পড়েন।

এদিকে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাকে জালিয়াতির তথ্য দিয়েও পাসপোর্ট পাওয়ার ঘটনা নিয়ে অধিদপ্তরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কারা কারা এই প্রক্রিয়ায় জড়িত তাদের খুঁজে শোকজ করার কথা জানা গেছে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তার সাধারণ পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। লাশ পুড়িয়ে গুম করার নির্দেশদাতাকে নিরাপদে দেশ ছাড়ার সুযোগ করে দেওয়ার পেছনে যারা জড়িত তাদেরও মুখোশ খুলে দেওয়া উচিত। না হলে রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।’

জানা যায়, কাফীকে এই কাজে সহযোগিতা করা কর্মকর্তা ছাত্র আন্দোলনের কিছুদিন আগে উপপরিচালক হিসেবে অধিদপ্তরে যোগ দেন।