বি এম জুলফিকার রায়হান, তালা : আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন চেয়ে দলের কাছে আবেদন করেছেন ৯জন প্রার্থী। দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে প্রার্থীরা ঢাকায় অবস্থান নিয়ে লবিং শুরু করেছেন। শেষে কে হবেন নৌকার মাঝি- তা নিয়ে প্রার্থীদের অনুসারীসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যপক উদ্দীপনা বিরাজ করছে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে তফশীল ঘোষণা করায় এলাকার ভোটারদের মধ্যে নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে।
আগামী ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য খেশরা ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৯জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতা রয়েছেন। তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম’র সাথে কথা বলে এতথ্য জানা গেছে।
সূত্রে জানা গেছে, এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে বর্তমান চেয়ারম্যান প্রভাষক রাজিব হোসেন রাজু, খেশরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাষ্টার আমিনুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ-আল-মামুন তাজ, সাবেক চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) শেখ কামরুল ইসলাম লাল্টু, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মো. খুরশিদ আলম, সেলিম রেজা, সরদার সুমন, প্রভাষক তরুণ কান্তি দাশ ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পিয়াস মাহমুদ জোর প্রচেষ্টা ও দলীয় শীর্ষ নেতাদের সাথে লবিং চালাচ্ছেন।
বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক রাজিব হোসেন রাজু বলেন, আমি বিগত ৫বছর ধরে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে গণসংযোগ, সভা, সমাবেশ অব্যাহত রেখেছি। আমার কাজের ভাল-মন্দ’র মূল্যায়ন দল ও জনগনই করবে।
এব্যপারে ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন তাজ বলেন, দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ’র নেতৃত্ব দেয়ার পর সফলতার সাথে এখন ইউনিয়ন আওয়াম ীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। তিনি বলেন, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং পারিবারিক ভাবে আওয়ামী লীগ করি। দলীয় চেতনা থেকে কখনও আদর্শচ্যুত হইনি এবং দলের বাইরে কিছুই চিন্তা করিনি। চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার লক্ষ্যে বছরের পর বছর ধরে এলাকায় ব্যপক গনসংযোগসহ সভা, সমাবেশ অব্যাহত রেখেছি এবং সবসময় দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। একারনে দল তাকে মনোয়ন দিবে এবং ইউনিয়নের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে নৌকা প্রতিককে বিজয়ী করবো।
অপর প্রার্থী শেখ কামরুল ইসলাম লাল্টু বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকাকালীন রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়ন সহ এলাকার উন্নয়নে ব্যপক কাজ করেছি। এছাড়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন এলাকায় কর্মী সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ করছি। তাই এলাকাবাসীর চাওয়া থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছি এবং দল আমাকেই মনোনয়ন দিবে।
নৌকার মনোনয়ন পাবার আশাবাদ ব্যক্ত করে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. খুরশীদ আলম বলেন, দলীয় মনোনয়ন পাবার জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করে তা’ জমা দিয়েছি। দল খুরশীদ আলমের প্রতি সুবিবেচনা করবে- বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. সেলিম রেজা জানান, দলের জন্য তিনি নিবেদিত প্রাণ হয়ে সেই ছোট বয়স থেকে কাজ করছেন। দলের জন্য আনুগত্যতা ও শ্রমের প্রতি খুশি হয়ে দলের হাই কমান্ড এবার তাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিবে। এজন্য ৯মার্চ রাতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সেলিম রেজাকে দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। একইসাথে তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঘোষ সনৎ কুমারকে বিষয়টি বলে দিয়েছেন বলে সেলিম রেজা জানান।
এরদিকে, আওয়ামী লীগের ঘাটি হিসেবে বিবেচিত খেশরা ইউনিয়নে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের মানুষ ব্যপক উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন। এখানে ৯জন প্রার্থীর মধ্যে ৩জন প্রার্থী রয়েছে খুবই সুবিধাজনক অবস্থানে। এছাড়া আরও দু’জন প্রার্থী রয়েছেন বেশ ভাল অবস্থানে। সব মিলিয়ে ৫জন প্রার্থীর যে কোনও একজন মনোনয়ন পেতে পারে এবং নৌকা প্রতিক পেলে তিনি বিজয়ী হতে পারবেন বলে ভোটারদের অভিমত। কিন্তু এই ৫জন শক্তিশালী প্রার্থীর মধ্যে কে হবেন নৌকার মাঝি- তা’ নিয়ে ইউনিয়ন ব্যপী জল্পনা আর উদ্বেগের শেষ নেই!