UsharAlo logo
সোমবার, ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্রিভুজ প্রেমের বলি তাজকির : কেএমপি’র প্রেসব্রিফিং

ঊষার আলো ডেস্ক
মার্চ ১৭, ২০২৫ ১:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

খুলনায় ত্রিভুজ প্রেমের বলি তাজকির আহমেদ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। অভি তাজকিরকে শায়েস্তা করার জন্য সীমার ব্যবহৃত গোপন মোবাইল ফোন থেকে হোয়াটস্অ্যাপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাজকিরকে খুলনায় আসতে বলে। তাজকির খুলনা আসলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অভি তার বন্ধুদের সহায়তায় তাকে অপহরণ করে নিজ বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অভিসহ ৪ বন্ধু মিলে তাজকিরের হাত-পা বেঁধে মুখে কচটেপ পেচিঁয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে ও পুরুষাঙ্গে উপর্যুপরি আঘাত করে, গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে নৃশংসভাবে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে তারা ৪ বন্ধু মিলে ডাকবাংলা থেকে ১০০ টাকা দিয়ে বস্তা ক্রয় করে তাজকিরের লাশ বস্তায় ভরে ইজিবাইকে করে ভোর রাতে ৪-৫ টার দিকে হার্ডবোর্ড খেয়াঘাটে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পূর্বে ভাড়া করে রাখা ট্রলারযোগে দৌলতপুর যাওয়ার দিকে নদীর মাঝখানে নিয়ে লাশ ফেলে দেয়।

সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় খুলনা কেএমপির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য তুলে ধরেন কেএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) এস এম শাকিলুজ্জামান।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় খালিশপুর থানা পুলিশ প্রেমিকা সুরাইয়া আক্তার সীমা, লাবনী বেগম এবং শহিদুল ইসলাম সাহিদকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। এছাড়া গ্রেফতারকৃত আসামী জিতু এবং রিয়াদ তাজকির হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। হত্যাকান্ডের পর লাশ বহনের কাজে ব্যবহৃত ইজিবাইকের চালক শহিদুল ইসলাম সাহিদকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি আসিফ মাহমুদ খালিশপুর থানায় তার মামাতো ভাই তাজকির আহম্মেদ নিখোঁজ হয়েছে মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যার জিডি নং-১১৫৪, তারিখ-২২/০২/২০২৫ খ্রি:। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পারে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে প্রেমিকার ব্যবহৃত হোয়াটস্অ্যাপ থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে তাজকির তার চাচাতো ভাই রনির শ্যালিকা সীমার সাথে দেখা করার জন্য ঢাকা থেকে খুলনা আসেন। তাজকির আহমেদ গত ২১ ফেব্রুয়ারি খালিশপুর থানাধীন গোয়ালখালি এলাকায় তার মামাতো ভাই আসিফ মাহমুদের বাড়িতে মাত্র এক ঘন্টার জন্য আসে এবং বাসাতে কিছু সময় থেকে প্রেমিকা সীমার সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এই ঘটনায় পরবর্তীতে নিখোঁজ যুবকের পিতা মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ৫ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জন আসামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। খালিশপুর থানার মামলা নং-২২, তারিখ-২৫/০২/২০২৫ খ্রিঃ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় প্রেমিকা সীমা সম্পর্কে তাজকির ভাইয়ের শ্যালিকা। সীমার সাথে ইসমাইল হোসেন অভির সাথে তিন বছর পূর্বে তাদের পরিবারের অমতে বিয়ে হয়। পরবর্তীতে অল্পদিনের মধ্যে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায় এবং অভি দেশের বাইরে চলে যায়। এই সুযোগে তাজকির আহম্মেদ এর সাথে সীমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ডিভোর্সের ৭/৮ মাস পরে অভি দেশে ফিরে এসে প্রাক্তন স্ত্রী সীমার সাথে যোগাযোগ করে এবং তাদের মধ্যে পুনরায় সম্পর্ক তৈরি হয়। এসময়ে ত্রিভূজ প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় যা একমাত্র সীমা জানতো।

ঊআ-বিএস