মোঃ মেহেদী হাসান, মনিরামপুর : দুই বিদ্রোহীর চাপে মনিরামপুরের ভোজগাতী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। গত রোববার অনুষ্ঠিত হওয়া এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলা মহিলা লীগের নেত্রী প্রভাষক আসমাতুন্নাহার পেয়েছেন ৩৭৪ ভোট। নির্বাচনে চার প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন তিনি। ভোজগাতী ইউপির নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নৌকার বিদ্রোহী হয়ে তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ৫৩৮ ভোট। নৌকার অপর বিদ্রোহী ভোজগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৩২ ভোট। এছাড়া হাতপাখা প্রতীক নিয়ে আসাদুজ্জামান পেয়েছেন ১ হাজার ১৫৮ ভোট।
উপজেলা নির্বাচন অফিসের প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভোজগাতী ইউনিয়নের ১০ হাজার ৭৭১ ভোটারের মধ্যে রোববার ভোট দিয়েছেন ৮ হাজার ৬৯৮ জন। প্রাপ্ত ভোটের মাত্র ৪.২৯ শতাংশ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন নৌকার এ প্রার্থী। যেখানে জামানত বাঁচাতে গেলে তাঁকে প্রাপ্ত ভোটের ১২.৫ শতাংশ ভোট পেতে হত। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন আসমাতুন্নাহার। তখনও তিন প্রার্থীর মধ্যে তিনি সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছিলেন।
চতুর্থ ধাপে ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ভোজগাতী ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ করেন আসমাতুন্নাহার, আব্দুর রাজ্জাক, শহিদুল ইসলাম ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শরিফুল ইসলাম রিপন। এরপর দলীয় ভাবে আসমাতুন্নাহার নৌকা পেলে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন বাকি তিন জন। ১১ নভেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন দলীয় চাপে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন শরিফুল ইসলাম। বিদ্রোহী হয়ে লড়াইয়ে থেকে যান আব্দুর রাজ্জাক ও শহিদুল ইসলাম। পরে এ দুই নেতাকে উপজেলা আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়। বহিস্কার আদেশ মাথায় নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করে অবশেষে নৌকাকে হারিয়ে জয় ছিনিয়ে আনেন আব্দুর রাজ্জাক। এদিকে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে বিদ্রোহী দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রেসক্লাব যশোরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন আসমাতুন্নাহার। তখন তিনি দাবি করেন, উপরের এক জনপ্রতিনিধির সহায়তায় বিদ্রোহী দুই প্রার্থী নৌকার প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন।