বরিশালে নাটকীয় কায়দায় তিন মাদ্রাসা ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। পরে রোববার রাতে তাদের মাদারীপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এর আগে রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের আমানতগঞ্জের বেলতলা এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া মাহমুদিয়া মাদ্রাসা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় বরিশালের জামিয়া ইসলামিয়া মাহমুদিয়া মাদ্রাসার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল ওই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির তিন ছাত্রী।
এ সময় অপরিচিত কয়েকজন যুবক চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে ইজিবাইকে করে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে আসে তাদের।পরে রাজধানী ঢাকায় পাচারের উদ্দেশে ওই তিন মাদ্রাসাছাত্রীকে যমুনা লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ওঠায়।
তখন মাদ্রাসাছাত্রী হাবিবা বুঝতে পারে চক্রটি তাদের অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় পাশে থাকা একযাত্রীর মোবাইল থেকে কৌশলে হাবিবা তার বাবাকে কল দেয়। পরে হাবিবার বাবা হাবিবুর রহমান পুলিশের জরুরি সেবা ট্রিপল (৯৯৯) লাইনে কল দিয়ে বিষয়টি জানান।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ডোমরাকান্দি এলাকায় হাইওয়ে লাম মীম হোটেলের সামনে যাত্রাবিরতি দেয় পরিবহনটি। এ সময় কৌশলে ওই তিন ছাত্রী বাস থেকে নেমে দৌঁড়ে একটি ইজিবাইকে উঠে টেকেরহাট বন্দরের দিকে আসে। পরে তাদের ধাওয়া দিয়ে ধরার চেষ্টা করে অপহরণকারীরা।
এদিকে ওই তিন ছাত্রীকে উদ্ধারে নামে বরিশালের গৌরনদী, মাদারীপুরের মোস্তফাপুর ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশ। পরে ইজিবাইকযোগে ওই তিন ছাত্রী টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ডে আসলে সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে পরিবারের সদস্য ও বরিশাল থেকে পুলিশ আসলে তাদের কাছে মেয়েদের হস্তান্তর করা হয়।
অপহৃত এক ছাত্রীর বাবা বলেন, আমার মেয়ে অন্য যাত্রীর মোবাইল দিয়ে কল করে অপহরণের কথা আমাকে জানায়। আমি সঙ্গে সঙ্গে ‘৯৯৯’-এ কল দিয়ে পুলিশের সহায়তা কামনা করি এবং হাইওয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধারে মাঠে নামে।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি আবু সাঈদ মো. খায়রুল আনাম জানান, ‘৯৯৯’ থেকে ফোন পেয়ে তিনটি হাইওয়ে থানা পুলিশ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসায়। পরে টেকেরহাট উত্তরপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শিশু তিনটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
মাদারীপুরের রাজৈর থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ বলেন, মেয়ে তিনটি উদ্ধারের ব্যাপারে থানায় কেউ কোনো সংবাদ জানায়নি। লোকমুখে শুনেছি বিষয়টি, যেহেতু বরিশালের ঘটনা এবং হাইওয়ে থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে।