ঊষার আলো রিপোর্ট : দ্রুত গতিতে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় কারণে সেচ সংকটে পড়েছেন ঝিনাইদহ জেলার কৃষকরা। জেলায় এবার আউশ চাষে বৃষ্টির পানিই কৃষকের এখন শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি প্রধান এলাকা। সে কারণে কৃষকরা আকাশের পানি দিয়ে আউশ ধান রোপনের দিকে ঝুকছে।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপদ সবজি উৎপাদনে পুরস্তার প্রাপ্ত কৃষক আলতাপ হোসেন যিনি দেশ বিদেশ সমাধি হিসাবে পরিচিত, তার কথায় শুধু গান্না এলাকাতেই নয়। আশপাশের এমনকি দুরবর্তি গ্রাম বা উপজেলার কৃষকরা চাষবাশের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। এলাকায় তিনি কৃষিগুরু হিসাবে পরিচিত। বিষমুক্ত নিরাপদ ফসল উৎপাদনে ছুটে চোলেছেন এ গ্রাম সে গ্রামে। বিনা খরচে আকাশের পানি বা সরাসরি বৃষ্টির পানিতে অথবা সম্ভব হলে বুষ্টির পানি ধোরে রেখে আউশ আবাদের উৎসাহি করে তুলছেন এলাকার কৃষকদের। পঞ্চাশোর্ধ আলতু মিয়া জানান, গানা, রামনগর, খামারাইল, দোইঝুড়ি বা অন্য গ্রামের কৃষকরা এবার দ্বিগুনের ও বেশি আউশ ধানের আবাদ করছেন। কোন ফসল আবাদে এমন পরিবর্তন হয় না তাই আগ্রহভরে জানতে চাওয়া হয় এর কারণ সম্পর্কে। তিনি জানালেন জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাবে আবহাওয়ার তারতম্য হচ্ছে। নিত্য মাটির নিচের পানি গভীর নলকুপ দিয়ে তোলার ফলে পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে বিধায় সেচ সংকটে পড়ছেন কৃষকরা। সম্প্রতি এবার নলকুপেও খাবার পানি জোটেনি বহু মানুষের। যে কোন ফষল উৎপাদনের চেয়ে বোরো ধান উৎপাদনে দ্বিগুন সেচের পানি রাসায়নিক সারের দরকার হয় যে কারণে কৃষকের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সরকার সার,ডিজেল,বীজসহ অনেককিছু ভুর্তুকি দিলে ও কৃষকরা আবাদ করে তেমন লাভের মুখ দেখতে পারছে না। আলতু মিয়া জানালেন, এখন বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে গেছে, প্রায় বৃষ্টিপাত বা আকাশের পানি হচ্ছে কমবেশি। সে ক্ষেত্রে বিনাসেচের আউশ চাষের বিকল্প কৃষকের সামনে খোলা নেই। বিনে পয়সায় বৃষ্টি, সম্ভব হলে বৃষ্টির সংরক্ষিত পানি দিয়ে তিনি আবাদ বাড়াতে চাচ্ছেন। এলাকার মিজানুর রহমান, আশরাফুল আশা, মফি মালিতা তৈয়ব আলীসহ বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বললে তারা সবাই জানালেন, প্রত্যেকেই এবার আউশ ধানের আবাদ বাড়িয়েছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম এলাকায় এবার কৃষকরা আউশ ধানের আবাদের দিকে ঝুকে পড়েছে দেখে মনে হচ্ছে তাদের খাওয়া ঘুম নেউ। অপরদিকে ও গান্না এলাকায় গত মৌসুমে ৪০ হেক্টর আউশের আবাদ হলে ও তা এবার ১শ’ হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষকরা জানান।অপরদিকে কৃষি সম্প্রসারন মাঠ পর্যায়ের কর্মী উপসহকারী কৃষি অফিসার(এসএএও) খলিলুর রহমান জানান, এবার কমপক্ষে ৭০ হেক্টর জমিতে আউসের সেচ বিহীন আবাদ হবে যা গত মৌসুমের দ্বিগুন। বর্তমানে কৃষকরা তাদের জমিতে ধান রোপনের জন্য যদি প্রস্তুত করতে শুরু করেছে। কৃষকরা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাঠে কাজ করছে। গরু-লাঙ্গল, কাচি, কোদাল দিয়ে চলছে আউশ ধান রোপনের কাজ। করছে হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমের কাজ দেখলে মনে হবে তাদের বসে থাকার কোন সময় নেই। পাইকপাড়া গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন, রামনগর গ্রামের মহিদুল ইসলাম বলেন, তারা বর্ষার ও আকাশের পানি পেয়ে তাদের জমিতে বিনে খরচে আউশ ধান রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করতে শুরু করেছে।
(ঊষার আলো-এমএনএস)