পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ন্যায়বিচার ও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী শেখ হাসিনা। ভারতের নিদের্শনায় হাসিনার পরিকল্পনায় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। বিজিবি সদস্যরা সীমান্তে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। একজন বিজিবি সদস্য দশজন বিএসএফ সদস্যের সমান। বিএসএফের কাছে বিজিবি সদস্যরা আতংকের নাম। তারা প্রায়ই বিজিবি সদস্যদের কাছে পরাজিত হয়েছে। আর বিজিবির শক্তি হচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। বিজিবির কর্মকর্তারা সবাই সেনা সদস্য। ভারত শেখ হাসিনাকে দিয়ে সেই সেনা কর্মকর্তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের প্রশিক্ষিত বাহিনীর সদস্যসহ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সরাসরি অংশগ্রহণ করে। এর তথ্যউপাত্ত খোদ শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সাক্ষ্য থেকেই উঠে এসেছে। যারা পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। খুনি হাসিনাসহ শেখ সেলিম, শেখ তাপস, মির্জা আজম, নানকরা প্রকাশ্যেই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এদেরসহ সব অপরাধীর চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট হলরুমে প্রাইম সিভিল সোসাইটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আকবর হোসেন। সেক্রেটারি জেনারেল মেহতাজ আজসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন লে. কর্নেল (অব.) ফেরদৌস আজিজ, লে. কর্নেল (অব.) ফরিদুল আকবর, লে. কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান (বীরপ্রতিক), মেজর (অব.) মোহসিন, মেজর (অব.) রেজা আহমেদ, মেজর (অব.) আলমগীর হোসেন, শহীদ মেজর তানভীরের স্ত্রী তাসনূভা, অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল মজুমদার, আইনজীবী শেখ ওমর, আব্দুল হাই, সাইফুল ইসলাম, আমজনতা দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান প্রমুখ।
তাসনূভা বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ঘটেছিল ইতিহাসের নির্মম হত্যাকাণ্ড। সেনাবাহিনীর ৫৭ জন অফিসারসহ মোট ৭৪ জনকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের শিকার আমার স্বামী মেজর তানভীরের লাশ এখনও আমি পাইনি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সময় আমিসহ আরও বহু সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, সন্তান, পরিবারের সদস্যরা পিলখানার ভেতরে ছিলাম। আমাদের উপরও নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। হাসিনা সরকার এবং হাসিনা নিজেই ওই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। হাসিনা ভারতের হয়ে সেনাদের হত্যা করিয়েছেন। বিজিবির পোশাকে খুনিদের কেউ কেউ হিন্দিতে কথা বলছিল।
মেজর (অব.) মোহসিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনাকে ২ ফুট দূরত্বে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, সেনা সদস্যদের বাঁচাতে কেন আপনার কোনো নিদের্শনা, ভূমিকা ছিল না। ২৪ ফ্রেবুয়ারি আপনি সেখানে গিয়েছিলেন, কিন্তু ২৬ ফেব্রুয়ারি আপনি যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন কেন। একের পর এক প্রশ্ন করেছিলাম। এ কারণে হাসিনা আমাকে চাকুরিচ্যুত করেছে। আমার সেনা কর্মকর্তাদের খুন করা হয়েছে, আমি প্রতিবাদ করেছি, সেটা হাসিনা মেনে নিতে পারেননি বলেই আমাকে বরখাস্ত করে। আমি দেড় বছর জেলে ছিলাম। হত্যার হুমকি দেওয়া হত সব সময়। এসব খুনির বিচার নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে হাসিনা পিলখানা, শাপলা চত্বর এবং জুলাই হত্যাকান্ডের মূল মাস্টারমাইন্ড।
এছাড়া বক্তারা বলেন, এত বিপুলসংখ্যক সেনাবাহিনীর সিনিয়র অফিসারদের একসাথে জীবন দেয়া ইতিহাসে বিরল। এমনকি বিশ্বের ইতিহাসে যুদ্ধেও একসাথে আর্মির এত বিপুলসংখ্যক সিনিয়র অফিসার জীবন দিয়েছেন, এমন নজির নেই। শুধু ভারতের সঙ্গে নিজের একক সম্পর্ক মধুর রাখতে খুনি হাসিনা স্বাধীনতার অতন্দ্রপ্রহরী দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর এত বিপুলসংখ্যক উর্ধ্বতন অফিসারকে নির্মমভাবে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করে। ভারত খুনি হাসিনাকে দিয়ে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে।
ঊষার আলো-এসএ