UsharAlo logo
বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেনশন প্রাপ্তিতে বিলম্ব

usharalodesk
এপ্রিল ১২, ২০২৩ ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট: অবসর ভাতা পাওয়ার জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের দ্বারে দ্বারে ঘোরার বিষয়টি বহুল আলোচিত। বস্তুত তহবিল ঘাটতির কারণেই পেনশনের জন্য এসব শিক্ষক-কর্মচারীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রায় এক দশক আগে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের পেনশনপ্রাপ্তিবিষয়ক জটিলতা যে পর্যায়ে ছিল, বর্তমানেও সেই একই পর্যায়ে রয়ে গেছে।

সরকারের দেওয়া অর্থের মুনাফা আর শিক্ষক-কর্মচারীদের দেওয়া চাঁদার অর্থ-এ দুই উৎস থেকে প্রতি মাসে যে পরিমাণ অর্থ জমা হয়, তা দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের পেনশন আবেদন নিষ্পত্তি করা যায় না।

নানা রকম সংকটের মধ্য দিয়েই বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের দিনযাপন করতে হয়। পেনশনের অর্থ পাওয়ার জন্যও যদি তাদের বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়, তা হবে দুঃখজনক। চাকরি ছাড়ার পর সময়মতো পেনশনের অর্থ না পাওয়ায় কোনো কোনো শিক্ষককে অর্ধাহারে-অনাহারেও দিন কাটাতে হয়। আমরা জানি, বৃদ্ধ বয়সে সবারই কমবেশি নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হয়। অর্থাভাবে ওষুধ ক্রয়ে সমস্যা হলে সংশ্লিষ্টদের কতটা বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয় তা সহজেই অনুমেয়। বস্তুত সন্তানের পড়ালেখার খরচসহ প্রতিদিনই বিভিন্ন খাতে দরকার প্রচুর অর্থ।

অবসর জীবনে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের যাতে দুর্ভোগ পোহাতে না হয়, সে জন্য পেনশনবিষয়ক সমস্যার সমাধানে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, এটাই কাম্য। উল্লেখ্য, অবসর বোর্ড বর্তমানে ২০২০ সালের মার্চ-এপ্রিলের আবেদনকারীদের অর্থ পরিশোধ করছে।

শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরিজীবনের শুরু থেকেই এমপিওপ্রাপ্তি, চাকরি স্থায়ীকরণ ইত্যাদি বিষয়ে নানা ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তারপরও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ার দায়িত্ব তারা পালন করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। শেষ বয়সে এসে শিক্ষক-কর্মচারীরা যেন আর ভোগান্তির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। তবে সরকারের আন্তরিকতায় এ সংকট দিন দিন কমছে। শিক্ষকদের দুঃখ দূর করতে নিয়মিত বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া দরকার বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

শিক্ষা খাতে সরকারের বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি হতে পারে। শিক্ষার মান উন্নয়নের সঙ্গে শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নের বিষয়টিও জড়িত। শিক্ষকদের কাঙ্ক্ষিত বেতন-ভাতা প্রদান করা না হলে শিক্ষার মান বাড়বে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

শিক্ষকতা পেশায় যাতে মেধাবীরা আগ্রহী হন, সে জন্য শিক্ষকদের সার্বিক জীবনমানের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। সব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাকরিকে আরও আকর্ষণীয় করতে হবে। কারণ বেশি মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী না হলে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হলেও এ খাতের লক্ষ্য অর্জনে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।

ঊষার আলো-এসএ