আরিফুর রহমান, বাগেরহাট : বাগেরহাটে স্কুলগামি মেয়েদের রাস্তায় উত্যক্ত করার দায়ে হাতে-নাতে ধৃত এক বখাটেকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। রবিবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা শহরের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোহাম্মাদ মোছাব্বেরুল ইসলাম বখাটে আব্দুল কাদের(৩৩) কে কারাদন্ড প্রদান করেন। দন্ড পাওয়া আব্দুল কাদের একজন ইজিবাইক চালক। সে সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের কাশিমপুর গ্রামের হেকমত শেখের ছেলে।
বখাটে আব্দুল কাদের বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে স্কুল যাওয়া আসার পথে শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি দেখিয়ে উত্যাক্ত করে আসছিল।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম জানান, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক আব্দুল কাদের সবার উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ স্বীকার করে নেয়ায় দন্ডবিধির ৫০৯ ধারায় তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। দুপুরেই তাকে পুলিশের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমরা মেয়েরা যারা স্কুলে পড়ি তাদের রিক্সা অথবা ইজিবাইকে চড়ে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হয়। কিছু চালক আছেন যারা মেয়েদের সাথে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিসহ নানা কটুক্তিমূলক কথাবার্তা বলে থাকেন। এই চালক কয়েকদিন ধরে আমাকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে ফলো করে আসছিল। এরমধ্যে দুই দিন তিনি আমাকে তার ইজিবাইকে উঠতে বললে আমি তাতে না ওঠায় তিনি আমাকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও উত্যক্ত করেন। আমি বিষয়টি পরিবারকে জানালে পরিবার আমাকে ওই চালককে সনাক্ত করতে উৎসাহ দেয়। আমি পরিবারের উৎসাহের জায়গা থেকে ওই চালককে সনাক্ত করি। তার শান্তি হওয়ায় আমি দারুণ খুশি। আমি চাইছিলাম ওই লোকটি আমার সাথে যে আচরণ করেছে তা যেন আমার স্কুলে পড়া অন্য সহপাঠি বা শিক্ষার্থীদের বেলায় না ঘটে। লোকটির সাজা হওয়ায় উনার মতো উত্যক্তকারীরা এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকবে বলে আশা করছি।
সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন পাল বলেন, কয়েকদিন আগে এই ইজিবাইক চালক বাগেরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে স্কুলে আসার পথে দুইদিন অশ্লীল অঙ্গ ভঙ্গি ও উত্যক্ত করে। প্রতিদিনের ন্যায় রবিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে স্কুলে রওনা দিয়ে আমলাপাড়া এলাকায় পৌছালে ওই চালক একই অবস্থা করে। পরে তার পরিবারকে জানালে তার পরিবার স্থানীয় কয়েকজনের সহযোগিতা নিয়ে ইজিবাইক চালককে ধরে স্কুলে নিয়ে আসে। পরে আমরা বিষয়টি প্রশাসনকে জানালে প্রশাসন এসে তাকে দন্ড দেয়। ভবিষ্যতে স্কুলে লেখা-পড়া করা মেয়েদের আর কেউ যাতে রাস্তায় বিরক্ত না করে এই মেয়েটির সাহসী পদক্ষেপ তার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।