আরিফুর রহমান, বাগেরহাট : বাগেরহাট পৌরসভার আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র খান হাবিবুর রহমান কে অবশেষে দুদকের মামলায় কারগারে প্রেরন করেছে আদালত। একই সাথে একই মামলায় পৌরসভার সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিমকেও কারাগারে পাঠিয়েছে। বুধবার দুপুরে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম শুনানী শেষে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। দুর্ণীতির মামলার শুনানীতে মেয়র খান হাবিবুর রহমানের পক্ষে শতশত আইনজীবী অংশ নেয়। দুর্নীতির মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা খান হাবীবুর রহমান বুধবার আদালতে জামিন নিতে যাওয়ার খবরে তার স্বজনরা ও দলের কর্মীরা আদালত পাড়ায় ভীড় করেন। মেয়র খান হাবীবুর রহমান তিন সপ্তাহ আগে উচ্চ আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাকে নি¤œ আদালতে আতœসমর্পণ করার নির্দেশ দেয়। উচ্চ আদালতের আদেশে তিনি বুধবার সকালে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে-১ আতœসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ বিচারক দুই আসামীর জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে, পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমানের জামিন মঞ্জুর না হওয়ায় তার কর্মী-সমর্থকরা বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ¦ালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৪০ মিনিট এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ এসে অবরোধকারীদের নিয়ন্ত্রন করে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। গেল বছর ২৫ নভেম্বর দুদকের সমন্বিত খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক (এডি) তরুণ কান্তি ঘোষ বাদী হয়ে অর্থ আতœসাতের অভিযোগ এনে মেয়র খান হাবিবুর রহমান, তৎকালিন সচিব রেজাউল করিমসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অপর আসামী মোহাম্মদ রেজাউল করিম বর্তমানে মাগুরা পৌরসভার সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন। দুদকের আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জী সাংবাদিককের বলেন, দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের ২ নং দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারার মামলায় প্র্য়া আড়াই ঘন্টা শুনানী শেষে আদালতের বিচারক বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও তৎকালিন সচিব রেজাউল করিমের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় মেয়র খান হাবিবুর রহমান বুধবার নিন্ম আদালতে আতœসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন।
বাগেরহাট সদর মডেল থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুর পৌনে একটার দিকে দুর্নীতির মামলায় বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা খান হাবিবুর রহমানকে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়ার খবর পেয়ে আদালত পাড়ায় থাকা কিছু বিক্ষুব্দ কর্মী-সমর্থক বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কে আগুন জ¦ালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তা নিয়ন্ত্রন করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। দুদকের সমন্বিত খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক (এডি) তরুণ কান্তি ঘোষ মামলার নথির বরাত দিয়ে বলেন, ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান কোন নিয়মনীতি প্রতিপালন না করে অবৈধভাবে ১৭ জনকে পৌরসভার বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়ে ১ কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩ টাকা উত্তোলন করে আতœসাত করেছেন। এছাড়া ২০১৪ ও ২০১৫ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় পৌরসভার উন্নয়নের জন্য স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডে ২ কোটি টাকা জমা করে। এই টাকা আবাহনী ক্লাব ও ডায়াবেটিস হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মানের জন্য ৫০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়। পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও তৎকালিন সচিব মোহম্মদ রেজাউল করিম ভবন নির্মান না করে পরষ্পর যোগসাজসে ব্যাংক থেকে ১ কোটি টাকা উত্তোলন করে আতœসাত করেন।