ঊষার আলো রিপোর্ট : মাদারীপুরের বাজারগুলোতে মৌসুমী ফল লিচুর সরবরাহ বেড়েছে। ফলের বাজার থেকে শুরু করে হাটবাজার ও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে লিচু। তবে বাজারে প্রচুর পরিমাণে লিচু পাওয়া গেলেও দাম এখনো অনেক বেশি। যার ফলে ক্রেতার সংখ্যাও কমতে শুরু হয়েছে। এদিকে ক্রেতা না থাকায় বিক্রি কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। একদিন বিক্রি বাড়লে, আরেকদিন খুবই কম বিক্রি হয়। এভাবেই চলছে লিচুর বাজার।
এদিকে লিচুর পাশাপাশি বাজারে আম উঠতে শুরু করেছে। জাতভেদে আম বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি পর্যন্ত। আম বিক্রির পরিমাণ বেশি বলে জানান বিক্রেতারা।
ক্রেতারা জানান, লিচু এখন শৌখিন ফলে পরিণত হয়েছে। ১শ পিস লিচু ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এতো দাম দিয়ে এই লিচু একবারের জায়গায় দুইবার আর কেনা হয় না।
জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, ‘লিচুর দোকানে বিক্রেতাদের চলছে হাঁকডাক। ৫০ ও ১০০ পিসের একেকটি আঁটি। ১০০ পিস লিচু ২৫০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারে যেগুলো একটু বড় সেগুলো ১০০ পিস ৩২০ টাকা করে। এছাড়া ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য লিচু। জেলার বাজারগুলোতে বর্তমানে ঈশ্বরদী ও যশোর এলাকার লিচু রয়েছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। এরপর দিনাজপুরের লিচু আসবে। সেগুলোর দাম আরও বেশি হবে বলে তারা জানান।
ভ্যানচালক সায়েম বলেন, মন চায় লিচু খেতে কিন্তু লিচুর কাছে গেলে দাম শুনলে লিচু কেনা তো দূরের কথা। লিচুগাছের পাতাও ছিড়তে মন চায় না।
আরেক ক্রেতা রিয়া বেগম বলেন, আমার একটি সাত বছরের মেয়ে লিনা লিচুর জন্য অনেক কান্না করতেছিল। আমার কাছে টাকা ছিল না তাই ৫০টি লিচু ১০০ টাকা দিয়ে নিয়েছি আর ৫০ টাকা বাকি রেখেছে। এভাবে যদি লিচুর দাম বাড়ে তাহলে তো আমরা আর লিচু খেতে পারব না।
বিক্রেতারা জানান, স্থানভেদে বিক্রি কমবেশি হয়ে থাকে। তবে বিক্রির পরিমাণ খুব যে বেশি তা না। কোনো কোনো দিন বিক্রি খুবই কম হয়। সেক্ষেত্রে লোকসান দিয়েও লিচু বিক্রি করতে হয়। ২৫০ টাকার মধ্যের লিচু বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। ৩০০ বেশি দামের লিচু ক্রেতারা কিনতে চান না। তাছাড়া ৫০ পিসের আঁটি বেশি বিক্রি হয়।’
মাদারীপুর লেকপারে লিচু বিক্রেতা রিপন বলেন, সপ্তাহের তিন/চার দিন ভালো বিক্রি হয়। তখন দৈনিক ১০ থেকে ১২ হাজার লিচু বিক্রি হয়। আবার অন্যান্য দিন ৪/৫ হাজার বিক্রি করতেই কষ্ট হয়ে যায়। এবছর লিচুর দাম একটু বেশি। গতবারের তুলনায় এবছর বিক্রির পরিমাণ কম। ক্রেতারা লিচু কম কিনছেন। দরদাম করেই চলে যাচ্ছে।’
আরেক ক্রেতা তহমিনা বলেন, ৫০ পিস লিচু কিনেছি ১৫০ টাকা দিয়ে। এর বেশি কিনতে গেলে বাজেট কম পড়ে যায়। লিচুর দাম বেশি। এজন্য লিচু খুব একটা কেনা হয় না। এদিকে ছেলেরা লিচুর জন্য মাথা খেয়ে ফেলে তাই যা টাকা আছে এর কিছু অংশ দিয়ে লিচু কিনেছি। গত বছরের চেয়ে এবার লিচুর দাম বেশি। তাই আমাদের কিনতে সমস্যা হচ্ছে।
ঊষার আলো-এসএ