UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ১০ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন না করে আক্রমণ করছে : প্রধানমন্ত্রী

koushikkln
সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ ১১:৫৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন না করে আক্রমণ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেখানে শান্তিপূর্ণ হচ্ছে সেখানে তো কেউ কিছু বলছে না। এরা তো মাঠে নেমেই আগে ভাবে কোথায় কাকে কীভাবে আক্রমণ করবে? কীভাবে একটা সিচুয়েশন তৈরি করবে। এমনি মিছিল করলে তো মিডিয়াতে কাভারেজ পাবে না। মিডিয়াতে কাভারেজ পাওয়ার জন্যই তারা এমন ঘটনা ঘটাবে।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির সংরক্ষিত আসনের এমপি রুমিন ফারহানার বক্তব্যের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, রুমিন ফারহানা ভোলার একটি ঘটনা নিয়ে অনেক প্রতিবাদ করে গেছেন। আমি বলেছি কিছু না বলার জন্য। আমি তো আন্দোলন করার কথা বলছি। বলেছি মিছিল করেন, আন্দোলন করেন- শান্তিপূর্ণ, কেউ কিছু বলবে না। যেখানে শান্তিপূর্ণ হচ্ছে সেখানে তো কেউ কিছু বলছে না। কিন্তু পুলিশ তো আগে বাড়িয়ে কিছু বলেনি। পুলিশ বাদ দেন, একটা মানুষ যদি আক্রান্ত হয় তার নিজেকে বাঁচাবার অধিকার আছে। উনাদের কথায় মনে হয়, তারা বোমা ছুড়বে, লাঠি মারবে, ঢিল ছুড়বে, গুলি করবে- সব করবে, তাদের কিছু বলা যাবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, কিছু মিডিয়া ও বিরোধী দল এমন একটা হতাশা ছড়ায় যে সব শেষ হয়ে গেলো। নিজেরা কিন্তু ভালোই আছেন, চলছেন। হতাশাব্যঞ্জক কথা ছড়িয়ে মানুষদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা মোটেই সমীচীন নয়।

ভোট দেওয়া যায় না- বিএনপির হারুনের এমন বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, হারুন সাহেব বলেছেন উনার এলাকায় নাকি ভোট ডাকাতি হয়েছে? কথাটা মনে হয় ঠিক। উনি যে জিতে এসেছেন, নিশ্চয়ই ভোট ডাকাতি করে জিতে এসেছেন। তিনি যদি ভোট ডাকাতি করে না আসেন তাহলে বুঝবেন কীভাবে ডাকাতি হয়েছে। ভোট যদি না-ই হয়ে থাকে উনি জিতলেন কীভাবে?

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন করলো না, ১৮ সালে ৩০০ আসনে ৭০০ প্রার্থী। এক প্রার্থী আসে লন্ডন থেকে, আরেক প্রার্থী আসে গুলশান অফিস থেকে। এক প্রার্থী আসে পুরানা পল্টন থেকে। রিজভী সাহেব একটা দেন তো ফখরুল সাহেব একটা দেন, সব নাকচ হয়ে যায় লন্ডন থেকে। তারা তো মনোনয়ন বিক্রি করেছে। কে কত টাকা দিতে পারে, সেটার নিলাম ছিল। যে টাকা দেবে, সেই নির্বাচন করবে।

তিনি বলেন, আমার মনে আছে ৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ৪০ দিন পর্যন্ত টেলিভিশনে দেখানো হয়েছিল জিয়া অত্যন্ত সৎ ছিল। জিয়ার প্যান্ট কেটে কোকোকে পরানো হতো। খালেদা জিয়া কোনও মতে রেশনের টাকা জোগাড় করে চলতো। জিয়াউর রহমানের ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া কিচ্ছু ছিল না। এরপর আমরা কী দেখলাম, খালেদা জিয়ার গায়ে উঠলো ফ্রেঞ্চ শিপন, যা বিদেশে ছাড়া পাওয়া যায় না। এক লাখ টাকা একটা শাড়ির দাম হয়। কোকো-তারেক সেই ভাঙা বাক্স জাদুর হয়ে গেলো। সেখান থেকে কোকো-২, কোকো-৬ কোকো-৮ বের হলো। সেখান থেকে শিল্প প্রতিষ্ঠান বের হলো। সেখান থেকে হাজার কোটি টাকা নিলো।

তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং আর টাকা চুরির কথা বলে। সেটা যা হয়েছে খালেদা জিয়ার ছেলের বেশ কিছু টাকা বিদেশ থেকে আনতে পেরেছি। কাজেই জাদুর বাক্স ছিল বিএনপির। রাতারাতি ভাঙা সুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জির মালিক যারা, তারা হয়ে গেলো হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। আজকে লন্ডনে থাকে কীভাবে?

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এই যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দা। বিদ্যুতের জন্য বিশ্বব্যাপী হাহাকার। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ সব জায়গায় নির্দেশ পানি ব্যবহার করতে পারবেন না। ব্রিটেনে রেশন করে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি ধুতে পারবে না। গোসল করতে হবে অল্প পানি দিয়ে। কাপড়চোপড় ধোয়া থেকে শুরু করে গাছে পানি দিতে হবে সীমিত।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়েছি। আগে থেকেই সবাইকে বলেছি সতর্ক হোন। এই যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে। বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্য রেশন করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের তো সতর্ক থাকতেই হবে। তারপরও অর্থনীতি ধরে রাখতে পেরেছি এটাই বেশি। বিশ্বব্যাংক বলেছে বাংলাদেশ খাদ্য ঝুঁকিতে নেই। আইএমএফ বলেছে বাংলাদেশ কোনও সংকটের মধ্যে নেই।

জিয়াউর রহমান ও বিএনপি-জামাত সরকারের অত্যাচার নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র দেখান প্রধানমন্ত্রী। ভবিষ্যতে তিনি এরশাদ সরকারের আমলের এ ধরনের ভিডিওচিত্র সংসদে প্রদর্শন করবেন বলেও জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবার হাতে নির্যাতিত হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর কারও প্রতি প্রতিশোধ নিতে যায়নি। আমরা সর্বশক্তি দেশের উন্নয়নে নিয়োজিত করেছি। যার সুবিধা দেশের মানুষ পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পর পর তিনবার এসেছে বলেই দুর্বৃত্তায়ন ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করে দেশের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পেরেছি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও করোনার জন্য বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। দেশবাসীকে আবারও আহ্বান জানাবো, সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। কম খরচ করতে হবে। সবাইকে নিজের প্রস্তুতি নিতে হবে, যেন অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কায় আমাদের দেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।