যশোর প্রতিনিধি : সর্বাত্মক লকডাউনের তৃতীয় দিনেও বেনাপোল স্থলবন্দর ও শার্শার সর্বত্র আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কঠোরভাবে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের ইতিবাচক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যদিও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শার্শা-বেনাপোলের কাঁচাবাজার, মাছবাজার ও মাংসের বাজার এলাকা খোলা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলীফ রেজা মোবাইল ফোনে জানান, সুবিধাজনক খোলা জায়গায় বাজার হস্তান্তর করার জন্যে আমরা প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা বলেছেন গত বছর এর মতো এবারও তারা বাজার সরিয়ে নেবেন। এদিকে সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় লকডাউন সফল করার লক্ষ্যে সবাই কাজ করছেন।
আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি তৎপর। তবে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে ইজিবাইক ভ্যান চালক দিন মজুর ফুটপাতের সবজি বা অন্যান্য পণ্য বিক্রেতা কিংবা হকার শ্রেণির শ্রমজীবী মানুষের চরম ভোগান্তি শুরু হয়েছে। তারা ঠিকমত কিছুই করতে পারছে না। ফলে দিন আনা দিন খাওয়া এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মানুষগুলো পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টে পতিত হয়েছেন। গতবার যেমন লকডাউনের শুরুতেই ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা ব্যক্তি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যেমে দ্রুত চাল-ডাল-তেল-লবণসহ ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হয়েছিল হতদরিদ্রদের মধ্যে এবার তার লক্ষণও নেই। ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে বিরাজ করছে চরম হতাশা।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বাজার চলবে সকাল ৯ থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত্য। তাহলে ক্রেতা বিক্রেতাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এই সময়ের মধ্যে ভ্যান ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে দিতে হবে। কিন্তু এখানে তা মানা হচ্ছে না। বেলা ১০ টার পর কোনো যানবাহনই রাস্তায় থাকতে পারছে না। তাহলে বাজারঘাট চলবে কিভাবে? এমনকি অসুস্থ রোগী বহন কিভাবে হবে? সরকার বলবে মুভমেন্ট পাশ লাগবে কিন্তু হতদরিদ্র অশিক্ষিত সাধারণ জনগণ কিভাবে অনলাইনে মুভমেন্ট পাশ জোগাড় করবে ? লকডাউন হোক করোনা প্রতিরোধ অভিযান চলুক সব ঠিক আছে। কিন্তু অবাস্তব কোনো কিছু কি যৌক্তিক? এরকমই সাধারণ জনমানুষের মনের অভিব্যক্তি। সরেজমিন বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে এসব জানা গেছে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা জনগণের সুবিধার দিকে লক্ষ্য রেখেই সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গতবছর লকডাউন চলাকালে কাস্টমস পুলিশ বন্দরসহ বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানও সাধারন জনগণের পাশে ত্রাণ সামগ্রীর সাহায্য নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু এবার কাউকেও দেখা যাচ্ছে না। ভরসা শুধু ইউনিয়ন পরিষদ। তাদের পক্ষ থেকেও কবে সাহায্য আসবে তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীফ রেজা জানান, দ্রুতই প্রস্তুুতকৃত তালিকা অনুযায়ী ৪৫০ টাকা করে জনপ্রতি বরাদ্দ হিসেবে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
(ঊষার আলো-এমএনএস)