মোঃ মেহেদী হাসান, মণিরামপুর : যশোরের মণিরামপুরে একটি হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করছেন চার যুবক। প্রতিদিন সকাল থেকে বিভিন্ন হাট-বাজার ও রাস্তায় ঘুরে তারা এই চাঁদাবাজি করছেন। হাতির সামনে পড়ে আতঙ্কে টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন দোকানি বা পথচারীরা। গত ৪-৫ দিন ধরে মণিরামপুরে প্রকাশ্যে তারা এই চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ। খুলনা থেকে বড় হাতিটি নিয়ে চার যুবক মণিরামপুরে এসেছেন। দিনের বেলায় তারা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে টাকা আদাই করছেন। এরপর রাত হলে আশ্রয় নিচ্ছেন রাস্তার পাশে কোন বাগানে। প্রতি বছর দুই তিনবার মণিরামপুরে এভাবে হাতি নিয়ে টাকা তুলতে দেখা যায়। বুধবার ও বৃহস্পতিবার (৯-১০ জুন) সকালে হাতিসহ চার যুবককে মণিরামপুরের হাকোবা ও দেবিদাসপুর এলাকায় দেখা গেছে। সরেজমিন দেখা গেছে, এক যুবক হাতির পিঠে চড়ে বসেছেন। হাতির পিছে হাঁটছেন তিন যুবক। কোন গাড়ি, মোটরসাইকেল, ভ্যান বা দোকান পেলে পথ আগলে দাঁড়াচ্ছে হাতিটি। এরপর শুঁড় বাড়িয়ে দিয়ে টাকা নিচ্ছে লোকজনের কাছ থেকে। সেই টাকা আবার শুঁড় উুঁচিয়ে দিচ্ছে পিঠে চেপে বসা সেই লোকটির কাছে। জনপ্রতি আদায় করা হচ্ছে ১০-২০ টাকা। দশ টাকার কম হলে টাকা নিচ্ছে না হাতি। তখন পথ আগলে দাঁড়িয়ে থাকছে। চাহিদামত টাকা পেলেই তারপর পথ ছেড়ে দাঁড়াচ্ছে। দুই-একজন স্বেচ্ছায় টাকা দিলেও অধিকাংশ মানুষ দিচ্ছেন বাধ্য হয়ে। ভ্যানে চড়ে আসার সময় হাকোবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তায় হাতির চাঁদাবাজির শিকার হন নাসরিন খাতুন নামে এক গৃহবধূ। তিনি ১০ টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। নাসরিন খাতুন বলেন, ভ্যানে আমি একা ছিলাম। হাতি এসে সামনে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীরা নাকি টাকা দিতেই হবে। তাই ১০ টাকা দিলাম। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত পথ ছাড়ছিল না। ভ্যান চালক মাসুম হোসেন বলেন, শুধু মণিরামপুরে না, ঝিকরগাছা বাজারেও হাতি দিয়ে টাকা তুলতে দেখিছি। হাতির সাথে থাকা একজনের নাম রাব্বি হাসান। তিনি বলেন, ৪-৫ দিন আগে খুলনা থেকে আইছি। দিনে দেড়-দুই হাজার টাকা আয় হয়। রাত হলে এক জায়গায় হাতি বেধে রেখে কলাগাছ এনে দিই। হাতি কলাগাছ খায়। আমরা পাশে তাবুর নিচে ঘুমাই।
মণিরামপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান বলেন, হাতি দিয়ে কয়েকজন দুই টাকা,পাঁচ টাকা, দশ টাকা তোলে। এটাকে চাঁদাবাজি বলে না। তাছাড়া কেউ অভিযোগ করে না। ওদেরওতো পেট আছে। বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার পরামর্শ এই কর্মকর্তার।