ঊষার আলো ডেস্ক : মাগুরার মহম্মদপুরের বেথুলিয়া গ্রামে মরিচ ক্ষেতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে গ্রামবাসীর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ-কেউ বলছেন স্ব-চক্ষে তিনটি বাঘ দেখেছেন। এলাকাবাসীর মনে এখন শুধু ভয় ও আতঙ্ক, ‘এই বুঝি এলো বাঘ’। বুধবার (৯ জুন) বাঘের পায়ের চিহ্ন দেখতে পান এলাকার লোকজন। তবে এগুলো বাঘের কি না তা নিশ্চিত হতে বিশেষজ্ঞের মতামত নেবেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
জমির মালিক কাজী উমর আলী দাবি করেন, বেথুলিয়া এলাকায় কালিগাঙ নামে একটি খালের পাড়ে তিনি মরিচের আবাদ করেছেন। সকালে পরিচর্যার জন্য ক্ষেতের উদ্দেশে বের হন। ক্ষেত থেকে আনুমানিক ৫০ গজ দূরে এলেই তিনি বড় একটি বাঘ দেখতে পান। ভয়ে দৌড়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যান। দূর থেকে তিনি তিনটা বাঘ দেখতে পান। একটা বড় বাঘের সঙ্গে আরও দুইটা বাঘ দেখতে পান। মা বাঘের সঙ্গে দু’টি বাচ্চা বলে তার ধারণা। তার চিৎকারে ১০-১৫ জন গ্রামবাসী জড়ো হন। তারা সবাই বাঘ দেখতে পান বলে তিনি দাবি করেন। একপর্যায়ে বাঘ তিনটি পাশের পাট ক্ষেতের মধ্যে চলে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মরিচ ক্ষেতে ও আশপাশে কিছু পায়ের ছাপ স্পষ্ট। এছাড়া এলাকার অনেকেরই গবাদি পশু হারিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। পায়ের ছাপ দেখে বড় আকৃতির চিতাবাঘ হতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন। টবে বন বিভাগ জানিয়েছে, বিষয়টি পরীক্ষা করতে হবে।
স্কুল শিক্ষক আলাউদ্দিন মিয়া জানান, তারা ভয়ে আছেন। বাঘের ভয়ে ফসলের মাঠে যাচ্ছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম আজম সাবু জানান, মহম্মদপুরে রেকর্ড ১০ হাজার হেক্টর জমিতে প্রতিবছর পাটের আবাদ হয়। পাট বড় বলে ফসলের মাঠ ঢেকে যায়। এ সময় বাঘ বের হওয়ার গুজব শোনা যায়। এবার বাঘ দেখা গেলো। পায়ের ছাপ দেখে মনে হচ্ছে বড় আকৃতির বাঘ।
তিনি জানান, এখানে মেছো বাঘের দেখা মিলেছে। কিন্তু কখনও বাঘ বা চিতা বাঘ দেখেননি। তবে তার দাদার মুখে শুনেছেন, এখানে একসময় চিতা বাঘ হানা দিতো।
বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিকদার মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি বন বিভাগের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তারা এসে আলামত সংগ্রহ করবেন।
মাগুরা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা তপেন্দ্রনাথ সরকার জানান, এ এলাকায় মেছো বাঘ ও ছোট আকৃতির চিতা বাঘের বিচরণ আছে। অনেক সময় গ্রামবাসীর হাতে বাঘ মারা পড়ে। আলামত সংগ্রহের পর বাঘ বিশেষজ্ঞরা বাঘের প্রজাতি ও আকৃতি সম্পর্কে জানাতে পারবেন।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল জানান, বাঘের পায়ের ছাপ দেখার বিষয়টি শুনেছেন। এ বিষয়ে বন বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
(ঊষার আলো-এমএনএস)