UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেম্বর আজমলের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ !

usharalodesk
মার্চ ৩১, ২০২১ ৪:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : পুরো নাম আজমল শেখ। মোংলার মিঠাখালী ইউনিয়নের আন্ধারিয়া গ্রামের মৃত আফতাব শেখের ছেলে তিনি। পরিবারের সবাই বিএনপি-জামায়াতের অনুসারী হলেও আজমল আওয়ামী লীগের কথিত সমর্থক। নিজেকে আওয়ামী লীগের কঠ্রোর পন্থি বলেও দাবি তার। তবে মিঠাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ ইস্রাফিল হাওলাদারের আর্শিবাদপুষ্ট অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি। সেই সুবাধে গত ইউপি নির্বাচনে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হয়ে যান মেম্বর। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় এলাবাসীর কাছে যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টিতে পরিণত হন আমজলের মেম্বর হওয়া।

কিন্তু মেম্বর হয়ে আজমল কি করেছেন? এলাকাবাসীর এমন প্রশ্নে সরেজমিনে বুধবার মিঠাখালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ। কর্মসূচীর টাকা আত্নসাৎসহ নারী কেলেঙ্কারী থেকে শুরু করে নানা ঘটনায় জর্জারিত সে।

নাম না প্রকাশে একাধিক ব্যক্তি জানান, আজমল মেম্বর একজন দুশঃচরিত্রের। খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার বটিয়াঘাটা গ্রামের প্রভাষ গোলদারের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গোলদারের সঙ্গে রয়েছে তার অবৈধ সম্পর্ক। সম্প্রতি সে প্রিয়াঙ্কাকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে মোংলা শহরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দু’মাস অবৈধভাবে মেলামেশা করতে থাকেন। সেখানে হাতেনাতে ধরা পড়ার পর মিঠাখালী ইউনিয়নের দত্তেরমেঠ গ্রামে প্রিয়াঙ্কার মামা শুনু গোলদারের বাড়িতে ওঠেন তারা দুজন। সেখানেও বিপত্তি ঘটে। সমাজপতিরা তাদের এই অবৈধ সম্পর্ক মেনে না নিয়ে আমজলের বিরুদ্ধে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বরাবর গণ স্বাক্ষরিত অভিযোগ করেন। পরে সিটি মেয়র আজমলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মোংলা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

পরবর্তিতে পুলিশ আজমলকে আটক করতে গেলে সে পালিয়ে থাকে। একপর্যায়ে আজমলের কথিত নারী বান্ধবী ওই প্রিয়াঙ্কা এলাকাবাসীর চাপে পড়ে ভারতে চলে যান। এরপর আজমলের চোখ পড়ে দত্তেরমেঠ গ্রামের রাজকুমার মন্ডলের মেয়ে মিঠু মন্ডলের ওপর। সেখানে নতুন বান্ধবীর সাথে তার চলছে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এলাকাবাসী তার এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

আজমল মেম্বর হওয়ার পর টাটিবুনিয়া এলাকায় ১৭ বিঘার একটি চিংড়ি ঘের দখলে নেয়। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন ইজারাদার এ অভিযোগ করে বলেন, ওই ১৭ বিঘা জমির মধ্যে তারও ১১ বিঘা জমি রয়েছে। সেটি রেষ্ট্রি দেওয়ার কথা বলেও এখনও দেয়নি।

এলাকাবাসী আরও অভিযোগ করে বলেন, বিচারের নামে আজমল মানুষকে বেধড়ক মারপিটসহ টাকা নেন। একবার বসিরখন্ড এলাকার বাবু মাঝিকে বিচারের নামে মারধর করার পর বাবু মাঝি দীর্ঘদির হাসপাতালে ছিলেন বলেও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে এলাকায় বয়স্ক ভাতার কার্ড ও পানির ট্যাঙ্কি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ারও। আর কর্মসূচির টাকা আত্নসাতের ঘটনা পুরোনো বলে জানান এলাকাবাসি। ১০ জনের নামে কর্মসূচীর ওই টাকা উঠিয়ে আত্নসাৎ করেন তিনি। এরমধ্যে বাবুল সরদার ও ইদ্রিস হাজারি ছাড়া বাকি আটজন আজমলের আত্নীয় বলে জানা গেছে।

এদিকে যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ সেই আজমল মেম্বরের ভাষ্য ভিন্ন। তিনি দাবি করেন, প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ তার ইমেজ নষ্ট করার এজন্য এগুলো বলে বেড়াচ্ছেন। আর নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা ২০০৮ সালের দাবি করে আজমল বলেন, এই ঘটনা সাজানো। তাকে ফাঁসাতে তখন ওই মেয়েকে দিয়ে এলাকার প্রভাশালীরা এই চক্রান্ত করেন।

আজমল শেখ এবার ইউপি নির্বাচনে আবারও মেম্বর (সদস্য) পদে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রায় প্রতিদিনই মটর সাইকেল শোডাউন দিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি এ ঘটনায় দাবি করে বলেন, “আমি আমার চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হাওলাদরের সাথে এভাবে সৌজন্য স্বাক্ষাতে যাই, শোডাউন না। এদিকে মোংলা উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোন প্রার্থী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঊষার আলো-আরএম)