UsharAlo logo
শুক্রবার, ১১ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মোনালিসার ছবি এত ভুবন বিখ্যাত হওয়ার কারণ কী?

ঊষার আলো
জানুয়ারি ৫, ২০২৫ ৪:১৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : জীবনে একবারও মোনালিসার ছবির রেপ্লিকা দেখেননি কিংবা ছবিটির বিষয়ে শোনেননি- এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। রেনেসাঁ যুগের চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা পাঁচ’শ বছরের পুরনো এই ছবিটিই সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত চিত্রকর্ম।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কেবল শিল্পগুণই না, ছবিটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রহস্য এবং একাধিক ঘটনা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় চিত্রকর্মগুলোর একটি করার পিছনে ভূমিকা রেখেছে।

যেভাবে সৃষ্টি হয় মোনালিসা

বলা হয়ে থাকে, ১৫০৩ সাল থেকে ১৫১৭ সাল পর্যন্ত এই বিখ্যাত ছবিটি আঁকেন লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। প্রথমে ইতালির ফ্লোরেন্সে এবং পরে রাজা ফ্রান্সিস প্রথমের আমন্ত্রণে ফ্রান্সে যাওয়ার পর সেখানেও ছবিটি নিয়ে কাজ করেন তিনি।

গবেষণাভিত্তিক অলাভজনক সংবাদমাধ্যম দ্য কনভার্সেশনে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, মোনালিসার ছবিটি আঁকা হয়েছিল একজন সিল্ক ব্যবসায়ীর অনুরোধে।

লিওনার্দোর প্রথম দিককার জীবনীকার ইতালিয়ান স্কলার জর্জিও ভাসারি ১৫৫০ সালে রচিত একটি বইতে এনিয়ে লেখেন।

তিনি লিখেছেন, সিল্ক ব্যবসায়ী ফ্রান্সেসকো ডেল গিওকোন্ডো লিওনার্দোকে তার স্ত্রী লিসা গেরারদিনির প্রোট্রেট আঁকতে অনুরোধ করেন।

ভিঞ্চিকে আগ্রহের কেন্দ্রে আনে

ইতালিতে যে কোনো নারীকে ‘মোনা’ বলে সম্বোধন করা হতো। আর ছবিতে থাকা নারীর নাম লিসা। শব্দ দু’টো মিলিয়ে ছবিটির নাম হয় ‘মোনালিসা’। তবে ছবিটি আসলেই তার ছিল কি না, এনিয়েও আছে বিতর্ক।

ছবিটির সঙ্গে লিওনার্দোর চেহারার অনেক বৈশিষ্ট্যের মিল থাকায় অনেকেই মনে করেন এটি আসলে শিল্পীর নিজেরই ছবি। আবার অনেকের ধারণা, এটি লিওনার্দোর মা কিংবা তার বান্ধবীর পোট্রেট। সবশেষ ২০১৫ সালে প্রচলিত সব তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করেন প্যারিসের একজন বিজ্ঞানী পাসকাল কোট।

দশ বছর ধরে গবেষণার পর এই গবেষক দাবি করেন, প্রোট্রেটের রহস্যময়ী এই নারী অন্য কেউ ছিলেন।

তার দাবি, ক্যানভাসের মোনালিসার পিছনে তিনটি আলাদা আলাদা ইমেজ। তৃতীয় যে ইমেজটি তিনি খুঁজে পাচ্ছেন সেটি অন্য এক নারীর মুখ, তার ঠোঁটে কোনো হাসি নেই। এই বিজ্ঞানী বেশ নিশ্চিত যে ক্যানভাসে খালি চোখে না দেখতে পাওয়া সেই মুখই লিসা গেরারদিনির। তবে লিওনার্দো নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন তাদের অনেকেই নতুন তত্ত্বটিকে তেমন গুরুত্ব দেননি।

‘অমূল্য’ মোনালিসা

ইতিহাস, দর্শন ও শিল্প নিয়ে কাজ করা প্ল্যাটফর্ম দ্য কালেক্টর বলছে, ১৮০৪ সাল থেকে চিত্রকর্মটি ল্যুভর জাদুঘরে আছে। আইন অনুসারেই এই ছবিটি ফরাসি নাগরিকদের। ফলে এটি বিক্রি করা অত্যন্ত কঠিন। সবমিলিয়ে এর দাম নির্ধারণ করা প্রায় অসম্ভব।

তবে ১৯৬২ সালে যখন একে ইনস্যুরেন্সের অধীনে আনা হয়, তখন এর মূল্য ধরা হয়েছিল ১০ কোটি ডলার, মূল্যস্ফীতির হিসেব ধরেই বর্তমানে যার বাজারমূল্য হতে পারে ৮৩ কোটি ডলারের বেশি।

এদিকে ২০২০ সালে ফরাসি উদ্যোক্তা স্টিফেন ডিস্টিংগুইন বলেছিলেন, মহামারীর বিপর্যয়কর প্রভাব থেকে ফ্রান্সকে পুনরুদ্ধারে মোনালিসাকে বিক্রি করা যেতে পারে।

আর ছবিটি যে পরিমাণ রাজস্ব এনেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এর দাম পাঁচ হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে বলেও সেসময় মন্তব্য করেন তিনি। তবে দাম নিয়ে তার এই মত খারিজ করে দেন শিল্প-সংশ্লিষ্টরা।

ঊষার আলো-এসএ