ঊষার আলো রিপোর্ট: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এক ছাত্রীকে (১৪) স্কুলপ্রাঙ্গণ থেকে ধরে নিয়ে যৌন নির্যাতন এবং ভিডিও চিত্র ধারণের পর লোকলজ্জার ভয়ে ওই স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।রোববার সকালে নন্দীপুর গ্রামের বকুল মিয়ার ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম ইমনকে (২০) নিজ গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে পুলিশ তাকে আদালতে প্রেরণ করে।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এসএম শাহাদাত হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, র্যাব মামলার ৩নং আসামি ইমনকে আটক করে আমাদের হাতে হস্তান্তর করে। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। ঘটনার বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য ইমনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
কটিয়াদী মডেল থানায় দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী এবার বনগ্রাম আনন্দ কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ করেছে। নবম শ্রেণিতে ভর্তির ফরম আনতে গত ২৫ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে স্কুলে যায় সে। এ সময় স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায় বনগ্রাম গ্রামের মলাই মিয়ার ছেলে আকাশ মিয়া (২৫), ছিদ্দু মিয়ার ছেলে আরমান মিয়া (১৯) ও পার্শ্ববর্তী নন্দীপুর গ্রামের বকুল মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া (২০)। তারা ওই স্কুলছাত্রীকে স্কুলের সীমানা প্রাচীরের আড়ালে নিয়ে যায়।
সেখানে একে একে তিনজন তাকে যৌন নির্যাতন করে এবং নির্যাতনের সময় মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করে। ওই স্কুলছাত্রী চিৎকার করলে একপর্যায়ে তিন যুবকের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে স্কুলের শিক্ষক, স্থানীয় চেয়ারম্যান, বাজারের লোকজন এবং এলাকাবাসীকে এ ঘটনা জানিয়েও বিচার পায়নি।এমন পরিস্থিতিতে মোবাইল ফোনে মায়ের কাছে যৌন নির্যাতন ও ভিডিও চিত্র ধারণের কথা জানায় সে। তার মা এসে স্কুল থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে দুপুর ২টার দিকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ওই স্কুলছাত্রী।
পরে রোববার ওই এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থাকায় ঘটনাটি কেউ জানতে পারেনি। নির্বাচনের পর ২৭ ডিসেম্বর এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী ওই স্কুলছাত্রী হত্যার বিচার ও যৌন নির্যাতনকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর মা তিন যুবক- আকাশ, আরমান ও ইমনকে আসামি করে কটিয়াদী মডেল থানায় মামলা করেছেন।