ঊষার আলো রিপোর্ট : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ক্যান্টিন মালিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন ক্যান্টিনেরই এক নারী কর্মচারী। শুক্রবার দুপুরে হল প্রাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর হোসাইনের কাছে মৌখিকভাবে এই অভিযোগ করেন ওই নারী কর্মচারী।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৎক্ষণাৎ ক্যান্টিন সিলগালা করেন হল প্রাধ্যক্ষ।
অভিযুক্ত ক্যান্টিন মালিকের নাম হাফিজুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের এলাকা মেহেরচণ্ডীর বাসিন্দা। তিনি হল প্রশাসনের থেকে ক্যান্টিন ইজারা নিয়ে খাবারের ব্যবসা করেন ওই হলে।
ভুক্তভোগী ওই নারী কর্মচারী বলেন, আমি ক্যান্টিনে তিন বছর যাবত কাজ করছি। আজ দুপুরে আমি কি করছি সেটা ক্যান্টিনের আরেক মহিলা কর্মচারী দেখছিল। দেখার পর ক্যান্টিন মালিকের কাছে এসে ফিস ফিস করে কি যেন বলছিল। তখন আমি মালিকের কাছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলেন না। এরপর সে আমাকে মারতে আসে। যখন সে আমাকে মারতে আসে তখন আমিও তাকে ধরি। এরপর হাফিজ আমাকে মারধর করে আর কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। এরপর একটা ব্যাগে চাল ডাল তুলে রেখে বলে আমি সেটা চুরি করছিলাম।
তিনি বলেন, আমাকে তাবলীগে যাওয়ার বাহানা করে আমার এক ভাবির বাসায় হাফিজ অনেকবার ফোন দিয়ে নিয়ে গেছে। বিষয়টি আমার ভাই দেখে তাকে মারতে গেছিল। প্রায় ১ বছর যাবত তিনি আমার সঙ্গে এমন আচরণ করে আসছেন। আমি বিষয়টি অনেককে বলতে চাইলেও সে আমাকে বলতে দেয়নি। আমি বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে জানিয়েছি এবং এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপও নিব।
অভিযুক্ত ক্যান্টিন পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, ওই মহিলা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে, তার সবই মিথ্যা। আমার ক্যান্টিনে ওই মহিলা বাদেও আরও একজন মহিলা এবং আমার স্ত্রী, সন্তানরাও কাজ করে। আজ সকালে জানতে পারি ওই মহিলা (ভুক্তভোগী) চাল, ডাল, মসলা ও তেল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল। সেসময় আরেক মহিলা কর্মচারী তাকে ধরে ফেলে। তখন দুজন মহিলার মধ্যে মারধর হয়। সেসময় আমি উপস্থিত হয়ে ঝগড়া থামিয়ে দিই। এবং ওই মহিলাকে বলি, ‘আপনি চুরিও করবেন, আবার মারামারিও করবেন।’ তখন ওই মহিলা (ভুক্তভোগী) নিজের জামাকাপড় নিজে ছিঁড়ে শিক্ষার্থী ও প্রভোস্ট স্যারকে দেখাবে বলে আমাদের হুমকি দেয়।
তাবলীগের নামে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ওর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলো সে নাটক করছে।’
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আজকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্যান্টিন পরিচালক হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্যান্টিনের একজন মহিলা কর্মচারী তাকে ধর্ষণ এবং মারধরের মৌখিক অভিযোগ করে। ওই কর্মচারী (ভুক্তভোগী) ক্যান্টিন থেকে বাহিরে এসে চিৎকার করতে থাকে। তখন ছাত্ররা এগিয়ে আসলে ওই নারী জানায়, হাফিজ তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছে। তখন স্টুডেন্টরা হাফিজের প্রতি রাগান্বিত হয়। কিন্তু হাফিজ বলে, ওই মহিলা চাল ও এক লিটার তেল চুরি করেছে। উভয়পক্ষকে ডেকে আমি জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।
হল প্রাধ্যক্ষ বলেন, যেহেতু একটি অভিযোগ উঠেছে, তাই আমরা হল প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যান্টিনটাকে বন্ধ ঘোষণা করেছি। আর সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা সকালে ডাইনিং এ খাবারের ব্যবস্থা করব। এরপর তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ক্যান্টিন কেমনে পরিচালনা করা যায়, আমরা সে বিষয়ে জানাব। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা যেভাবে চাইবে, আমরা সেভাবেই কাজ করব।
ঊষার আলো-এসএ