মোঃ রায়হান মোল্লা : করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি নির্দেশনায় লকডাউনে খুলনার আদালতের বিচার কার্যক্রম বন্ধে অলস দিন কাটাচ্ছে আইনজীবীরা। এমনকি, জনশুন্য হয়ে পড়েছে আদালত প্রাঙ্গন। যার কারণে ঝুলে রয়েছে হাজার হাজার বিচারাধীন মামলা। এর ফলে চাঞ্চল্যকরসহ বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পতিতে বিলম্ব হচ্ছে। ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষেরা। এরআগে, গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। যার ফলে সকল আদালত বন্ধ হয়ে যায়। তবে শুধু মাত্র হাজতি আসামিদের ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে জামিন শুনানীর কার্যক্রম চলছে। দেওয়ানী ও ফৌজদারীর নতুন মামলাগুলো ফাইলিং করা হচ্ছে। কিন্তু বিচারকার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
আইনজীবীরা জানান, প্রতিদিনের আয়ের উপর তাদের সকল ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। কিন্তু আদালত অঙ্গন পুরো বন্ধ থাকায় তাদেরকে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল জীবনযাপন করতে হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিধি মেনে অনান্য অফিস আদালতের মতো যদি আদালত খুলে দেওয়া হতো তাহলে আমাদের এই কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হতে হতো না। তারা আরও জানায়, বিচার ব্যবস্থার গতি যদি করোনার কারনে থেমে যায়, তাহলে বিচার প্রার্থীরা কিভাবে ন্যায় বিচার পাবে। কিভাবে আইনজীবীরা বিচারপ্রার্থীদের পাশে এসে দাড়াবে। আসামিদের ব্যক্তিগত হাজিরা অব্যাহত রেখে নিযুক্ত আইনজীবীর উপস্থিতিতে বিচারকার্যক্রম চালানো উচিত।
এদিকে, আইনজীবীদের কল্যানে খুলনা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে গত রবিবার (০৯ মে), খুলনা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আর্থিক অনুদান প্রদানের জন্য স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে।
এবিষয়ে, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক এ্যাড. কে, এম ইকবাল হোসেন জানান, আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় আইনজীবীদের অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো আদালতের বিচারিক কার্যক্রম খুলে দেওয়া হলে আবার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি হবে, মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। সেই সাথে আইনজীবীরাও ভালো থাকবে। তা না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
খুলনা অতিরিক্ত মহানগর আদালতের আইনজীবী এপিপি কাজী সাব্বির আহমেদ জানান, করোনায় প্রথম দিকের লকডাউনের পর ২০২০ সালের ৫ আগস্ট সিমিত আকারে বিচার কার্যক্রম শুরু করা হয়। যেটি গত মার্চ মাস পর্যন্ত কিছুটা গতি লাভ করছিলো। কিন্তু করোনায় ২য় লক ডাউনে আদালতের বিচার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারনে বিচারাধীন মামলাগুলো ঝুলে আছে। সেই সাথে বিচারপ্রার্থীরাও প্রতিনিয়ত ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা স্বমন্বয়কারী এড. মোমিনুল ইসলাম জানান, যদি এভাবে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। তাহলে অপরাধীরা অপরাধের সুযোগ পাবে। কারণ বিচার ব্যবস্থার গতি যদি করোনার কারনে থেমে যায়, তাহলে বিচার প্রার্থীরা কিভাবে ন্যায় বিচার পাবে। কিভাবে আইনজীবীরা বিচারপ্রার্থীদেও পাশে এসে দাড়াবে।