ঊষার আলো রিপোর্ট : আসন্ন জলবায়ু সমঝোতা (কপ-২৯) সম্মেলনে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি সীমাবদ্ধ রাখতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল বার্ষিক ৪০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার দাবি জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর এক হোটেলে ৪০টি নাগরিক সংগঠন এবং উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের জোট ‘ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যালায়েন্স-বাংলাদেশ’র পক্ষে এ দাবি জানানো হয়।
অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে সমঝোতা সম্মেলন ২৯-এর কাছে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি-৩) আপডেট একটি স্বচ্ছ এবং সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা বলা হয়।
স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের এনডিসি-৩ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আর্থিক, প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহায়তাসহ সব দেশের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধে একটি নির্ধারিত সময়সীমা নির্ধারণ করতে বলা হয়।
অনুষ্ঠানে অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে ক্লাইমেট ফাইনান্সিংয়ের সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং বর্ধিত নতুন অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে বলা হয়। জলবায়ু অর্থায়নে অভিযোজন এবং প্রশমনের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখাসহ উন্নয়নশীল, দরিদ্র ও অধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রয়োজনের কথা বিবেচনার কথা বলা হয়। মানবাধিকারের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিরূপণ এবং একটি নীতি কাঠামো প্রণয়নে বৈশ্বিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানানো হয়েছে।
অ্যালায়েন্সটির সমন্বয়কারী এবং সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা অ্যালায়েন্সটির পক্ষ থেকে দাবিসমূহ উপস্থাপন এবং ব্যাখ্যা প্রদান করেন। আসন্ন সমঝোতা সম্মেলন ২৯-এর বিভিন্ন এজেন্ডার উপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা প্যারিস জলবায়ু চুক্তি এবং সমঝোতা সম্মেলনের বিভিন্ন চুক্তিগুলো বাস্তবায়নে বাস্তবায়নযোগ্য সিদ্ধান্ত চাই। তিনি বৈশ্বিক লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের স্থলে প্রয়োজনভিত্তিক এবং ক্ষয়ক্ষতির আলোকে নতুন বর্ধিত লক্ষ্যমাত্রার দাবি করেন।’
ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর তালহা জামাল বলেন, ‘জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিতকরণে নাগরিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যালায়েন্স-বাংলাদেশ’ সেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘বহুজাতিক এবং বহুপাক্ষিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে বেসরকারি মুনাফা-কেন্দ্রিক ঋণকেন্দ্রিক অর্থ লগ্নির পরিবর্তন করতে হবে। জলবায়ু বিপদাপন্ন মানুষ এবং দেশের জন্য অভিযোজন, প্রশমন এবং লস অ্যান্ড ড্যামেজের জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়াটার কিপার এলাইয়েন্সের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ সদস্য শরীফ জামিল, ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, সিসিডিবি’র নির্বাহী পরিচালক জুলিয়েট কেয়া মালাকার, বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. সাইফুল ইসলাম, এসডিএস’র নির্বাহী পরিচালক রাবেয়া বেগম, হেলভেটাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রশান্ত ভার্মা, জলবায়ু ও জল শাসন বিশেষজ্ঞ আদনান ইবনে আদবুল কাদের। নাগরিক সমাজের পজিশন পেপারে নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন সিপিআরডির শেখ নুর আতায়া রাব্বি।
ঊষার আলো-এসএ