UsharAlo logo
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শৈত্যপ্রবাহের বিস্তৃতি কমেছে, তবে কমেনি শীত

usharalodesk
জানুয়ারি ২৫, ২০২৪ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট: চলতি শীত মৌসুমে মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ ৪৩ জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও গতকাল বুধবার তা কমে ১৮ জেলায় নেমে এসেছে। কমেছে শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতাও, বেড়েছে দিনের তাপমাত্রা। কিন্তু সে তুলনায় শীতের অনুভূতি তেমন কমেনি। দেশের কোথাও কোথাও হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।

আজ বৃহস্পতিবারও দেশের চার বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চলমান শৈত্যপ্রবাহ আগামীকাল (আজ) একই রকম থাকতে পারে কিংবা দু-এক জায়গা থেকে কমতে পারে। আবার যেসব জায়গায় বৃষ্টি হয়ে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে সেসব জায়গায় রাতের তাপমাত্রা কমবে।’

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল রংপুর (আট জেলা) ও রাজশাহী (আট জেলা) বিভাগের সব জেলা এবং কিশোরগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা ওপর দিয়ে মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার কিছু কিছু জায়গা থেকে তা কমতে পারে।

গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়, ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিশোরগঞ্জের নিকলী, রাজশাহী, নওগাঁর বদলগাছী, কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ থেকে ৯ ডিগ্রির মধ্যে। এ ছাড়া ১০ ডিগ্রি বা এর নিচে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পাবনার ঈশ্বরদী, বগুড়া, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও ডিমলা এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে।

এদিকে আজ ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি থাকতে পারে আগামীকালও।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও সামান্য কমতে পারে রাতের তাপমাত্রা। আগামীকাল দিন ও রাতের তাপমাত্রা উভয়ই প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।

কোথাও কোথাও কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত থাকতে পারে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের চার বিভাগের ১১ জেলায় সামান্য বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

চুয়াডাঙ্গায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

চুয়াডাঙ্গায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে গতকাল বিকেল থেকে দুর্ভোগ নেমে আসে জনজীবনে। রাস্তাঘাট হয়ে পড়ে কর্দমাক্ত। চুয়াডাঙ্গা শহরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক জাহিদুল হক জানান, বিকেল ৩টা ২০ মিনিট থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

হিলিতে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা

গতকাল সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে। ঠাণ্ডার কারণে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। হিলি সিপি রোডে বসা কামার কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, ‘প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে দুই দিন ধরে দোকান খুলতে পারিনি। ঠাণ্ডা বাতাস আর ঘন কুয়াশায় মানুষ ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছে না। তাই আমাদেরও কাজ কাম কমে গেছে।’ দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল হিলিতে ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

ঘন কুয়াশায় ঢাকা নওগাঁর পথঘাট

ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমশীতল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নওগাঁর জনজীবন। ভোর থেকেই কুয়াশায় ১০ হাত ব্যবধানেও কিছু দেখা যায়নি। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত কুয়াশার কারণে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া অফিস গতকাল সকাল ৯টায় জেলায় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নামলে সেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণার নির্দেশনা থাকলেও গতকাল নওগাঁয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুত্ফর রহমান জানান, সকাল ১০টার পর স্বাভাবিকভাবেই ১০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা থাকে। এ কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ে কৌশলে চলছে প্রাইভেট ক্লাস

শৈত্যপ্রবাহের কারণে ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ে সব সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যেও গতকাল সকালে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ে কৌশলে শিক্ষকদের প্রাইভেট ক্লাস নিতে দেখা গেছে।

জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার জানান, পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হলেও বিদ্যালয়ের অন্যান্য কার্যক্রম চলবে। নতুন কারিকুলামে বিদ্যালয়ে প্রাইভেট বা অতিরিক্ত ক্লাস করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঊষার আলো-এসএ