পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) ছয়জন হাই-প্রোফাইল বিদেশি ক্রিকেটারকে তাদের পারিশ্রমিকের পুরো অর্থ ফ্র্যাঞ্চাইজিদের দিতে হবে না। এক লাখ ডলার করে দেবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের ওপর চাপ কমানোর জন্য এই সিদ্ধান্ত। ডন-এর খবরে বলা হয়, পিসিবি তাদের ১০ লাখ ডলারের বিশেষ তহবিল থেকে এই অর্থের জোগান দেবে। উদাহরণস্বরূপ করাচি কিংসে ডেভিড ওয়ার্নারের বেতন তিন লাখ ডলার। এর মধ্যে এক লাখ ডলার দেবে পিসিবি এবং বাকি দুই লাখ ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক।
পিএসএলের প্রসঙ্গ টেনে আনার কারণ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) পারিশ্রমিকের ইস্যুতে জট খোলার কোনো ফলপ্রসূ উদ্যোগই নেয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শুধু আশ্বাস। দুর্বার রাজশাহীর খেলোয়াড়দের অনুশীলন বয়কট করতে হয়েছে পারিশ্রমিক আদায়ের জন্য। অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও যে শর্ত পুরোপুরি মেনে খেলোয়াড়দের বেতন দিচ্ছে, তা-ও নয়।
দৃশ্যত, পারিশ্রমিক-বিতর্ক বিপিএলে প্রতিবারই হয়। কার্যত, বিসিবি খেলোয়াড়দের শতভাগ পারিশ্রমিক আদায় করে দিতে কখনোই সফলকাম হয় না কিংবা হওয়ার চেষ্টা করে না।
এই বিতর্কে ঘৃতাগ্নি করেছেন বিপিএলে এবার খেলতে আসা এক বিদেশি ক্রিকেটার। রাজশাহীর শ্রীলংকান ক্রিকেটার লাহিরু সামারাকুনের অভিযোগ, তিনি এখনো পারিশ্রমিক পাননি। নিজের প্রাপ্য বুঝে নিতে এই অলরাউন্ডার বিসিবির শরণাপন্ন হয়েছেন। চুক্তি অনুযায়ী তিনি রাজশাহীর কাছে পাবেন ১৫ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮ লাখ ২০ হাজার টাকা)। কিন্তু একটি টাকাও পাননি তিনি। একটি ইংরেজি গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
বিপিএলে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক তিন ভাগে পরিশোধের নিয়ম রয়েছে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে মোট পারিশ্রমিকের ৫০ শতাংশ এবং বাকি ৫০ শতাংশ সমান দুই ভাগে টুর্নামেন্টের মাঝে ও শেষে মিটিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু বিপিএলের ইতিহাসে এই নিয়ম কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি অনুসরণ করেনি, শুধু ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। খেলোয়াড়রাও ধরে নিয়েছেন যে, পারিশ্রমিকের পুরো অর্থ পাওয়া যাবে না। ‘নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো’-বিসিবির মতো খেলোয়াড়রাও এই দর্শনে বিশ্বাসী।
আয়োজক বিসিবি দৃশ্যমান কোনো কার্যকর উদ্যোগ কখনোই নেয়নি। বরং, জোর দিয়েছে আবরণ চাকচিক্যময় করার ওপর। যেমন, এবার বিপিএল কনসার্টে শুধু পাকিস্তানি শিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খানের পেছনে খরচ করেছে তিন কোটি ৪০ লাখ রুপি। এই টাকা যদি খেলোয়াড়দের একাংশের পারিশ্রমিক মেটানোর জন্য ব্যয় করা হতো, যৎসামান্য হলেও অভিযোগের স্তূপ জমা হতো না। কিন্তু কে শোনে কার কথা। বিসিবি তো আর পিসিবি নয়!
ঊষার আলো-এসএ