ঊষার আলো রিপোর্ট : সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীতে ফারজানা আক্তার (২৭) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।নিহত গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও বাবার বাড়ির লোকজন বলছেন পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
সোমবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।নিহত গৃহবধূ ভাটিয়ারী ৫নং ওয়ার্ড মৌলভীপাড়া আখেরুজ্জামান বাড়ির মো. ইউনুস প্রকাশ রুবেলের স্ত্রী।
নিহত ফারজানা উপজেলার ৪নং মুরাদপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আব্দুর রশিদ সারেং বাড়ির আবু তাহেরের চতুর্থ মেয়ে।সোমবার রাত সাড়ে সাতটায় উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আব্দুর রশিদ সারেং বাড়ির মো. আবু তাহেরের চতুর্থ মেয়ে ফারজানা আক্তারের সঙ্গে ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মৌলভীপাড়া আখেরুজ্জামানের বাড়ির প্রবাসী মো. ইউনুস প্রকাশ রুবেলের ২০১৮ সালে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বছরখানেক সুখে সংসার কাটার পর এই দম্পতিরপরে তাদের কোলজুড়ে ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তান আসে। ২০২৩ সালে স্বামী মো. ইউনুস প্রবাস জীবন ছেড়ে এসে দেশে-বাড়িতে কাজকর্ম করে দিনাতিপাত করছিল। এরই মধ্যে শুরু হয় তাদের সংসারে অশান্তি। শ্বশুরের পরিবার ও স্বামীর পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত চাপ দেয় যৌতুকের জন্য।
সোমবার সন্ধ্যার পর গৃহবধুর নিজ শয়ন কক্ষ আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পুলিশ গিয়ে লাশট উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্টের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
নিহত গৃহবধূর বাবা আবু তাহের বলেন, আমার মেয়েকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেরে ফেলেছে। প্রায় সময় স্বামী ও শ্বশুর পক্ষ আমার কাছ থেকে মেয়ের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে যৌতুক দাবি করতো।গত এক বছর ধরে স্বামী বিদেশ থেকে বাড়ি চলে আসে। আমার মেয়ে যদি ফাঁস খেতো,তাহলে পা দুটো কেন মাটিতে লাগানো।তারা আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
অপরদিকে নিহত গৃহবধূর ভাসুর সেলিম উদ্দিন বলেন, পারিবারিক একটা ঝামেলা নিয়ে আমরা সকলে থানায় ছিলাম। আমার ভাইও ছিল চাকরিতে।বাসায় ছিল আমার দুই ভাইয়ের বউ। আসলে এখন কেমনে কি হইছে আমি কিছু বলতে পারতেছি না।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির এস.আই আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি।গৃহবধূর লাশটি উদ্ধার করেছি। ময়না তদন্ত রিপোর্টের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালর (চমেক) মর্গে প্রেরণ করবো। আসলে এই মুহূর্তে কিছুই বলতে পারছি না।
তিনি আরও জানান, গৃহবধূ কি ফাঁস দিয়ে নিজেই আত্মহত্যা করেছে, না অন্য কোনভাবে মৃত্যু হয়েছে।ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে আসলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানাতে পারবো। তবে এই বিষয়ে আমরা সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করবো।
ঊষার আলো-এসএ