ক্রীড়া ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাকি আর মাত্র ৩টি ম্যাচ। তার আগে ফাইনালের টিকিট কাটতে মাঠে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান, ভারত ও ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের লড়াই জিতে যেখানে সবারই প্রাথমিক লক্ষ্যটা বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা। এরপর শিরোপার স্বাদ নেওয়া।
সেমিফাইনালের প্রথম ম্যাচে আগামীকাল সকাল সাড়ে ৬ টায় মাঠে নামবে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা। আফগানরা এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলছে। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সবশেষ সেমিতে খেলেছে ২০১৪ বিশ্বকাপে। যদিও কখনোই বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার কীর্তি নেই তাদের। কখনোই সেমিফাইনালের বাধা টপকাতে পারেনি দলটি। বড় মঞ্চে চোক করার অভ্যাসটা প্রোটিয়াদের পুরনো। যা আশা দেখাচ্ছে আফগানদের।
আফগানরা আরও বেশ কিছু জায়গায় আশা দেখতে পারেন। কেননা, এবারের বিশ্বকাপে রেকর্ড চারবার তাদের ওপেনিং জুটি পেরিয়েছে ৫০ রানের ঘর। এরমধ্যে তিনবার সেঞ্চুরি পেরিয়েছে কোনো উইকেট না হারিয়েই। এছাড়া এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তিন জনের দু’জনই আফগানদের। ৭ ম্যাচে রহমানুল্লাহ গুরবাজের রান ২৮১। অন্যদিকে তালিকার তিন নম্বরে থাকা আরেক আফগান ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানের রান ২২৯। সেমিফাইনালেও তাদের ওপরই থাকছে নজরটা। তবে বোলিংয়ে পার্থক্য গড়ে দিতে মূল ভূমিকাটা থাকবে ফজলহক ফারুকী ও রশিদ খানের ওপরই। ফারুকী এরইমধ্যে বিশ্বকাপের এক আসরে রেকর্ড ১৬ উইকেটের কীর্তি নিজের করে নিয়েছেন। ১৪ উইকেট নিয়ে রশিদ আছেন তিন নম্বরে। কাজেই দলকে ফাইনালে নিতে গুরুদায়িত্বটা নিতে হবে তাদেরকেই।
অন্যদিকে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংটা সেই অর্থে ক্লিক না করলেও, এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচেই হারেনি দলটি। গ্রুপপর্বের পর সুপার এইটেও সবকটি ম্যাচ জিতেছে তারা। যা বড় মঞ্চে নামার আগে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে তাদের। তবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ফাইনালে যেতে হলে নির্ভর করতে হবে ওপেনার কুইন্টন ডি ককের ওপর। চলতি আসরে ৭ ম্যাচে ১৯৯ রান তুলে দলের সেরা ব্যাটার তিনি। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লেতে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেওয়ার দায়িত্বটা নিতে হবে তাকেই।
এছাড়া ব্যাট হাতে ডেভিড মিলার ও হেইনরিখ ক্লাসেনের জ্বলে উঠার অপেক্ষায় থাকবে দলটি। এদের কেউ একজন দাঁড়িয়ে গেলেই ম্যাচটা নিজেদের করে ফেলতে পারে প্রোটিয়ারা। আর বোলিংয়ে দলটিকে সাফল্য পাইয়ে দেওয়ার দায়িত্বটা নিতে হবে দুই পেসার আনরিচ নর্টজে ও কাগিসো রাবাদাকেই। কেননা, তাদের হতেই দিনশেষে নির্ভর করছে প্রোটিয়াদের ফাইনালে খেলার ভাগ্য।
দিনের অপর সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচে। দু’দলেরই ট্রাম্পকার্ড হতে পারেন দলের অধিনায়ক জশ বাটলার ও রোহিত শর্মা। আগ্রাসী শুরু এনে দিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের ভিতটা গড়ে দিয়ে আসতে হবে তাদেরই। তাছাড়া দু’জনেই আছেন দারুণ ছন্দে। প্রতিপক্ষের বোলারদের ত্রাস তারা। বিশ্বকাপে ৬ ইনিংসে রোহিতের রান ১৯১। তার সমান রান জশ বাটারারেরও। দু’জনের স্ট্রাইকরেটও সমান ১৫৯। কাজেই যা প্রমাণ করে দু’জনের লড়াইয়ে যে জিতবে ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা তারই বেশি।
এর বাইরে ভারতের বোলিং আক্রমণে বড় ভূমিকা থাকবে জাসপ্রিত বুমরাহ ও আরশদীপ সিংয়ের। ভারতের হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট আরশদীপের। ৬ ম্যাচে ১৫ উইকেট তার। অন্যদিকে বুমরাহর শিকার ১১ উইকেট। তবে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের কাছে ত্রাস ছড়াতে পারেন বুমরাহ। নিজের দিকে ইংল্যান্ডকে একাই ধসিয়ে দিতে পারেন তিনি। ইংল্যান্ড বোলারদের অবশ্য সময়টা ভালো কাটছে না। ইংলিশদের সেরা বোলার জোফরা আর্চার। এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ৯টি। আদিল রশিদেরও তাই। তাই বোলিংয়ে ভারতকে দমিয়ে রাখার কাজটা তাদেরই করতে হবে এই ম্যাচে। নয়তো ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপের তকমাটা হারাতে হতে পারে ইংল্যান্ডকে।
ঊষার আলো-এসএ