ঊষার আলো প্রতিবেদক : করোনা মহামারির মধ্যেই নির্বাচন করা উচিৎ হবে কিনা সে বিষয়ে ঈদের ছুটির পর আগামী ১৯ মে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (১১ মে) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার উপস্থিতিতে কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠকে ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক, আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠকে যেসব নির্বাচন স্থগিত আছে যেগুলোর মেয়াদ শেষ হচ্ছে সে সব তথ্য নিয়ে আলোচনা করে আগামী ১৯ মে কমিশন সভা আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়।
সভার আলোচ্য সূচিতে রাখা হয়েছে, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্থগিত নির্বাচন, ষষ্ঠ ধাপের ১১টি পৌরসভাসহ প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের স্থগিত নির্বাচন; সিলেট-৩, ঢাকা-১৪ ও কুমিল্লা-৫ শূন্য আসনের নির্বাচন; ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের সাধারণ নির্বাচন ও পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার পরিষদের অন্যান্য নির্বাচন; লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর পৌরসভা নির্বাচনের তদন্ত প্রতিবেদন এবং বিবিধ।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ১৯ মে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৪ থেকে ৫টা এজেন্ডা আছে। প্রথম ধাপের ৩৭১টি ইউপি নির্বাচনসহ যেসব নির্বাচন ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো, সেগুলোতে নির্বাচন হবে কিনা সে বিষিয়ে আগামী ১৯ তারিখে সিদ্ধান্ত হবে।
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় গত ১১ এপ্রিলের সব নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ১১ এপ্রিল প্রথম ধাপে ৩৭১ ইউনিয়ন পরিষদ ও ১১টি পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে উপ নির্বাচন এবং কয়েকটি উপজেলা ও জেলা পরিষদের বিভিন্ন পদে উপ-নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
গত ১ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের প থেকে বলা হয়, পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ না হওয়া পর্যন্ত এসব নির্বাচন হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচন যে অবস্থায় বন্ধ হয়েছিল, সেখান থেকে এ প্রক্রিয়া আবার শুরু করা হবে। এসব নির্বাচনী এলাকায় প্রচারে ছিলেন প্রার্থীরা। স্থগিতের পর সব ধরনের প্রচার এখন বন্ধ থাকবে। পরে যখনই ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হবে, এই প্রার্থীরাই তখন নির্বাচনে অংশ নেবেন।
বর্তমানে জাতীয় সংসদের চারটি আসন শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে সিলেট-৩ আসনটি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েছের মৃত্যুতে গত ১১ মার্চ শূন্য হয়। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ-এর দফা- ৪ অনুসারে আগামী ৮ জুনের মধ্যে এ আসনের উপনির্বাচনের অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রধান নির্বাচন কমিশন এ সময়ের মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং সংবিধান প্রদত্ত নিজ মতা বলে ৮ জুনের পরের ৯০ দিনের মধ্যে এ নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে গত ২৯ এপ্রিল এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনে উপনির্বাচনও স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে গত ২৭ এপ্রিলের মধ্যে অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সৃষ্ট দৈব-দুর্বিপাকের কারণে এ নির্বাচনও পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়ে গত ৪ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।
এ ছাড়া গত ৪ এপ্রিল সংসদ সদস্য আসলামুল হকের মৃত্যুতে ঢাকা-১৪ আসন এবং গত এপ্রিল সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরুর মৃত্যুর কারণে কুমিল্লা-৫ আসনটি শূন্য হয়েছে।