UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ১০ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৫ কোটি টাকার পণ্যসহ চোরচক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার

ঊষার আলো
জানুয়ারি ২৮, ২০২৩ ১১:৩৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকা অফিস : রপ্তানির উদ্দেশে গার্মেন্টস পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার পথে চুরি করা একটি চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)।

শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) নারায়নগঞ্জের বন্দর থানাধীন লাঙ্গলবন্দ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ২৬ হাজার ৯৯৫ পিস গার্মেন্টস পণ্যসহ একটি কাভার্ডভ্যান জব্দ করে র‌্যাব।

গ্রেফতাররা হলেন- রিপন ওরফে ছোট রিপন (৪৩), বিল্লাল হোসেন ওরফে ছোট বিল্লাল (৩৬), নাঈম ইসলাম (২৭), আকাশ (২৬), সুমন (৩০), ফরিদ (৩৮) ও মঞ্জুর হোসেন জিকু (৩৮)।

র‌্যাব জানায়, ফ্যাক্টরি থেকে বিদেশে পাঠানোর জন্য গার্মেন্টস পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার সময় পথে করা হতো চুরি। কাভার্ডভ্যানের ৬০-৭০ ভাগ পণ্য নামিয়ে রেখে পুনরায় প্যাকেজিং করে বন্দরে পাঠাতো এই চোরচক্র।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরে র‌্যাব-৪ প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে পরিচালিত ৭টি অভিযানের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গার্মেন্টস পণ্য চুরি প্রক্রিয়ার একটি সাধারণ ধারণা পাওয়া যায়। জানা যায়, চক্রটির একাধিক মাস্টারমাইন্ড গার্মেন্টস পণ্য পরিবহনে কাভার্ডভ্যানের ড্রাইভার ও হেলপারদের সঙ্গে সসম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নির্জন স্থানে ড্রাইভার ও হেলপারের মাধ্যমে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানটি নিয়ে যেতেন তারা।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, সেখানে দেড়-দুই ঘণ্টার মধ্যে মালামালের ৩০-৪০ ভাগ রেখে প্রত্যেক কার্টুনে সমপরিমাণ ঝুট কাপড় রেখে আবার আগের মতো কার্টুন বাঁধাই করে কাভার্ডভ্যানে লোড করে দিত চোরচক্র। এরপর কাভার্ডভ্যানটি বন্দরের উদ্দেশে রওনা দিলে নিজস্ব মিনি কাভার্ডভ্যানে করে চুরি করা পণ্য নিজেদের সুবিধামত যায়গায় নিয়ে যায় চক্রটি।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গত ২৬ জানুয়ারি কাভার্ডভ্যান থেকে গার্মেন্টসপণ্য চুরির সময় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। চক্রটির মাস্টারমাইন্ড রিপন ও বিল্লাল কিছু সময়ের মধ্যে চুরি করা গার্মেন্টস পণ্য বুঝে নিতে আসলে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, চোরচক্রের শিরোমণি রিপন ২০১৭ সালে রেন্ট এ কারের চালক হিসেবে কাজ করার সময় গার্মেন্টসপণ্য চোরচক্রের হোতাদের সঙ্গে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে রিপন নিজেই একটি চক্র গড়ে তোলে।

মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, রিপনের প্রধান সহযোগী গ্রেফতার বিল্লাল। মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে রিপনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। বিল্লাল গোডাউন ভাড়া করার বিষয়টি দেখভাল করতেন। রিপন কাভার্ডভ্যান নির্ধারণ করে নাঈমকে অবগত করতেন। এরপর তিনি কাভার্ডভ্যানটি পূর্বনির্ধারিত গোডাউনে পৌঁছানো এবং গার্মেন্টস পণ্য চুরির সময় আশেপাশে নজরদারিসহ সার্বিক দায়িত্বে থাকতেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতার ফরিদ প্যাকেজিং করার কাজে অত্যন্ত দক্ষ হওয়ায় তিনি কার্টুন থেকে মালামাল বের করে পুনরায় কার্টুন প্যাকেজিং করতেন। মঞ্জুর গোডাউনের মালিক এবং ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি, তার কাছে থাকা গ্যানিং মিশিন দিয়ে কাভার্ডভ্যানের নাট-বল্টু কাটতেন। ড্রাইভার আকাশ ও হেলপার সুমন মূলহোতা রিপনের প্রস্তাবে রাজি হয়ে তার কথামতো নির্ধারিত গোডাউনে গাড়ি পার্ক করাতেন।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় গার্মেন্টস পণ্য চুরির একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।