UsharAlo logo
শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অকার্যকর বিধিনিষেধ

usharalodesk
মে ১০, ২০২১ ৫:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকার তৃতীয় দফা লকডাউন ঘোষণার পাশাপাশি বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছিল। যার মধ্যে ছিল ঘরের বাইরে গেলে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা, প্রত্যেক নাগরিকের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও যথাসম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলা। তবে ঈদ সামনে রেখে সরকারের এসকল কঠোর বিধিনিষেধ শুধু শিথিল নয় বরং হয়ে পড়েছে পুরোপুরিই অকার্যকর।

বিভিন্ন ঘাটে দেখা যায় ফেরিতে ওঠার জন্য শত শত মানুষ ভিড় জমিয়েছে। অনেকেই কোমরপানতে নেমে বা দড়িতে ঝুলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে উঠেছে। ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং তার আশপাশের এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ গ্রামে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার ঈদের সময় নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য সকলকে পরামর্শ দিয়েছিল।

লকডাউনের কারণে দূরপাল্লার যানবাহন বাস, ট্রেন কিংবা লঞ্চ ইত্যাদি বন্ধ রয়েছে। বলা হয়েছিল শহর ও জেলার ভেতরে এসকল যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তবে অন্য জেলায় যেতে পারবে না। তবে বেশিরভাগ মানুষই দলে দলে ফেরিতে কিংবা সড়কে মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মোটরসাইকেলে করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছে। এই জনস্রোতকে ঠেকাতে গত শনিবার বিআইডব্লিউটিএ দিনের বেলা ফেরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে তা আর কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন ফেরিঘাটে দেখা যায় তা মানুষের ভিড়ে ঠাসা।  এদিকে ঢাকা থেকে ছোট–বড় নানান বাহনে মানুষ গিয়ে যমুনা সেতুর এপারে এলেঙ্গায় পৌঁছায়। তাররপর ওখান থেকে ট্রাক, মাইক্রোবাস কিংবা মোটরবাইকে সেতু পার হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে।

যদি যাত্রাপথেই এই মানুষগুলোকে আটকানো যেত তাহলে কিন্তু মাঝপথে সেতু বা ফেরিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থ কসরত করতে হতো না। যেখানে কড়াকড়ি করার কথা সেখানে শিথিলতা কোনও ফল দেবে না। দেশের বিভিন্ন সড়কে দেখতে পাওয়া অপ্রতিরোধ্য জনস্রোতই তার প্রমাণ। এখন উচিত উৎসস্থলে জনস্রোত বন্ধ করে দেওয়া, তা না হলে মহাবিপর্যয় ঘটে যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের বলছেন, ভারতে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহ রূপ নেওয়া ও করোনার ভারতীয় ধরন বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ আর নেই। তবে জনস্রোত ঠেকানোর আগে দেখতে হবে এ মানুষগুলো কেন গ্রামে যাচ্ছে? যদি তাঁরা কাজ হারিয়ে নিরুপায় হয়ে গ্রামে যেতে বাধ্য হয়ে থাকেন, তার দায়ও কাউকে নিতে হবে। এটা এড়ানো যাবে না। উচিত ছিল এই সহায়–সম্বলহীন মানুষদের খেয়ে–পরে বেঁচে থাকার মতো সহায়তা নিশ্চিত করা। যাঁরা ঈদ উৎসব পালন করতে স্বেচ্ছায় গ্রামে যাচ্ছেন তাঁদেরকে আটকানো যেতেই পারে। তবে সহায়–সম্বলহীন মানুষগুলোকে কোনও প্রকার আর্থিক সহায়তা না দিয়েই কিভাবে কেউ বলতে পারে ‘‘তোমরা শহরে থাকো’’। আমাদের সকলের এখন উচিত নিজ নিজ স্থান থেকে সকলকে উপলব্ধি করা।

(ঊষার আলো-এফএসপি)