UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অতি লোভে ফাঁসলেন বগুড়ার দুই বন্ধু

usharalodesk
জানুয়ারি ১৩, ২০২৩ ৭:১২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : কথায় আছে লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় এমনই ঘটনা ঘটেছে। দুই বন্ধু অতিরিক্ত লোভ করতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন। টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েও লাভ করতে পারেননি তারা। তদন্ত ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দুই বন্ধুকে আটক করে পুলিশ।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন এ তথ্য জানান। তাদের বিরুদ্ধে শুক্রবার থানায় মামলা দায়ের করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার ষাঁড়বুরুজ গ্রামের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলী।

আটককৃতরা হলেন উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে জিয়াউল হক জিয়া (৩৩) ও বেলঘড়িয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (৩০)। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) তাদেরকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পুলিশ জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলীর সঙ্গে নন্দীগ্রামের জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানার দীর্ঘদিনের ধান ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা। এ উপজেলা থেকে ধান কিনে তারা বিভিন্ন কোম্পানিতে সরবরাহ করতেন। ব্যবসার লেনদেনের টাকা সোহেল রানার ইসলামী ব্যাংক নন্দীগ্রাম শাখার একাউন্টে পাঠানো হতো।

এক পর্যায়ে দুই বন্ধু জিয়াউল হক ও সোহেল রানার মাথায় বুদ্ধি আসে টাকা আত্মসাৎ করার। গত বুধবার (১১ জানুয়ারি) মিনার আলীর কথামতো এরোমেটিক এগ্রো অ্যান্ড ফুড লিমিটেডের মালিক ২১ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন সোহেলের একাউন্টে।

এদিকে মিনারের কথামতো ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা দুটি একাউন্টে পাঠান সোহেল। ধান কেনার জন্য বাকি ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যান জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানা।

কিন্তু ওইদিন সন্ধ্যায় মিনারকে ফোন করে সোহেল জানান, ব্যাংক থেকে ফেরার পথে টাকাগুলো ছিনতাই হয়ে গেছে।

ভাটরা ইউনিয়নের মকবুল মেম্বার থানায় ফোন করে জানায়, উপজেলার সিমলা বাজার থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে ঢাকারগাড়ী ব্রিজ এলাকায় তার ছেলের ব্যবসায়ী পার্টনার জিয়াউল হক ডাকাতির কবলে পড়েছেন এবং টাকাগুলো নিয়ে গেছে।

ওসি আনোয়ার আরও জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশের চৌকশ টিম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সাজানো নাটক হিসেবে সন্দেহ করে পুলিশ।

এদিকে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়ে বুধবার রাতেই থানায় আসেন বেলঘড়িয়া গ্রামের জিয়াউল হক ও সোহেল। অভিযোগে লেখেন, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে জিয়াউল হক জিয়া মোটরসাইকেল যোগে ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তার পথরোধ করে টাকার ব্যাগ ছিনতাই হয়।

জিয়া ও সোহেল ভেবেছিলেন থানায় অভিযোগ করলেই পুলিশ তাদেরকে সন্দেহ করবে না। কিন্তু পৌরসভার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন হয়।

অবশেষে নিজেদের সাজানো নাটকে নিজেরাই ফেঁসে যান দুই বন্ধু। তাদের দুজনের তথ্যের ভিত্তিতে পৌরসভার ওমরপুর এলাকার এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকি এক লাখ টাকা উদ্ধার করা যায়নি।