ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের আব্দুলাপুরের করেরগাঁও এলাকায় পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে সিসা গলানোর কারাখানা।
এসব কারখানায় নষ্ট ও বাতিল ব্যাটারি এবং পুরোনো লোহার বর্জ্য এনে গলানো হচ্ছে। বর্জ্য গলানোর সময় এর ক্ষতিকারক ধোঁয়ায় ক্ষতি হচ্ছে স্থানীয় মানুষের। দূষিত হচ্ছে চারপাশের পরিবেশ, নষ্ট হচ্ছে ফসল ও জমি। পাশাপাশি এখানে কর্মরত কর্মচারীরাও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। সিসা কারখানার চারপাশে জন্মানো ঘাস খেয়ে হুমকির মুখে পড়ছে পশুপাখিরা। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাসের পর মাস চলে আসছে এ কারখানা। কারখানাটির কাগজপত্র দূরে থাক নেই ন্যূনতম সাইনবোর্ড।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারখানার ভেতরে ২৫-৩০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। কেউ পুরোনো ব্যাটারির উপরের অংশ খুলে প্লেট বের করছেন; কেউ ব্যাটারি থেকে অ্যাসিড বের করছেন। এসব শ্রমিক পুরোনো ব্যাটারি ভেঙে অ্যাসিড বের করা ও সিসার কাজ করে রাত-দিন পাশের পুকুরে হাত-মুখ ধুয়ে থাকেন। ফলে পানির রং কালচে আকার ধারণ করেছে। এছাড়া ব্যাটারির অ্যাসিডের প্রকট গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় টিনের বেড়া দিয়ে সাইনবোর্ড বিহীন গড়ে উঠা ওই কারখানাটিতে দীর্ঘদিন ধরেই পুরনো ব্যাটারি থেকে সিসা পোড়ানো হচ্ছে। এতে কারখানার আশপাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে ক্ষেতের ফসল ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি গাছপালা ও সবজির ক্ষতি হচ্ছে। অনেকের শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক নানান জটিলতা দেখা দিয়েছে। অবিলম্বে সিসা কারখানাটি বন্ধসহ সিসা তৈরিতে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি তাদের।
কারখানার সার্বিক ব্যবস্থাপনার দয়ি ত্বে থাকা কালাম বলেন, ছয় মালিক মিলে পার্টনারে এ কারখানা পরিচালনা করছেন। জাহিদুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন, জহির, হারুন, কালু মিয়া, সুমন এ ছয়জন মালিক পার্টনারে এ কারখানা পরিচালনা করেন। এ কারখানায় ২৫-৩০জন শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক কারখানার শ্রমিক বলেন, গরিব মানুষ কাজ করে খেতে হয়। অন্য কাজ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ব্যাটারি কারখানায় কাজ করছি। অন্য কোথাও কাজ না পাওয়া পর্যন্ত এখানেই কাজ করবো।
সিসা তৈরির কারখানার কোনো অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে কারখানা মালিক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অনুমতি নেই ।
কেরানীগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আবু রিয়াদ বলেন, এ কারখানাগুলোর কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ নষ্ট করে। ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে অবৈধ সিসা কারখানা অনেকগুলো বন্ধ করেছি। অবৈধভাবে কারখানাগুলো গড়ে উঠেছে। কেরানীগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে ।