ঊষার আলো রিপোর্ট : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) খালেদা জিয়া হলে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে৷ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টায় হলের ডাইনিং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। তবে হলের আবাসিক শিক্ষকরা ঘটনা জানার পরও প্রায় দুই ঘন্টা পর ঘটনাস্থলে আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা৷বারবার এসব সংকটপন্ন পরিস্থিতিতে হল কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীন আচরণে শিক্ষার্থীদের জীবন শঙ্কার মুখে পড়ছে বলে জানান তারা।
জানা যায়, বুধবার হলের ডাইনিংয়ে গ্যাসের চুলায় নতুন সিলিন্ডার লাগানো হয়। তবে সিলিন্ডারের সঙ্গে চুলার সংযোগ চাবি থেকে গ্যাস লিকেজের কারণে চুলা জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গেই আগুন জ্বলে ওঠে। এ সময় হলের অধিকাংশ ছাত্রীরাই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। এ ঘটনায় হঠাৎ হলের ছাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ পরে তারা জরুরী সেবা নাম্বারে (৯৯৯) কল দিলে কুষ্টিয়া শহর থেকে প্রায় এক ঘন্টা পর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের পরামর্শে হলের ছাত্রীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে হলের আবাসিক শিক্ষকরা ঘটনা জানার পরও দুই ঘন্টা পরে হলে আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, কোনো সংকটময় সময়ে হলের আবাসিক শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট কাউকেই পাওয়া যায় না। তারা একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের ফোন করলেও তারা সাড়া দেয়নি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দায় কেউ নিতে চায় না। হলে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে এর দায় কে নেবে?
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের হলে বিগত দুই মাসে পাঁচ বার বিদ্যুৎ লাইন থেকে আগুন লাগে। তবে এখনও পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ এই সমস্যার কোনো ধরনের স্থায়ী সমাধান দিতে পারেনি। আজ আবার গ্যাসের লাইন থেকে আগুন লাগলেও আমরা সময়মতো কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের সাহায্য পায়নি৷ তারা আমাদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে উদাসীন। কোনো কিছু বললেই তারা দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের কথা বলে৷ আমরা আমাদের হলের সকল সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায়।
এদিকে ছাত্রীরা হলে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার বন্ধ করা, প্রত্যেক ব্লকে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন ও এর ব্যবহারবিধী সম্পর্কে সকলকে সচেতন করার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া এর আগেও হলে একাধিকবার বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটায় পুরো হল পুনরায় সংস্কারের দাবিও জানান তারা।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের লিডার রফিকুল ইসলাম বলেন, গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপে লুজ কানেকশন ছিলো। যার ফলে সিলিন্ডার অন করতে গেলেই আগুন লাগে। আমরা সবকিছু চেক করেছি, আপাতত বিপদমুক্ত। ঘটনার জন্য হলের ম্যানেজার ও সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি রয়েছে।
হলের ডাইনিং ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা নারগিস খাতুন বলেন, হলে বৈদ্যুতিক সমস্যার কারণে হিটার চালানো আপাতত বন্ধ। আমাদের দুই জায়গায় রান্নার জন্য একটি চুলায় সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বেশকিছুদিন যাবত গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে আজকের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত।
এ বিষয়ে খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক ড. এরশাদুল হক বলেন, আমাকে ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই আমি বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানিয়েছি। এছাড়া হলের আরও দুইজন আবাসিক শিক্ষককে সাথে নিয়ে আমার ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে একটু দেরি হয়েছে। তবে আমি পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত এই সময়টুকুও মেয়েদের হলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রেখেছি৷
এছাড়া ছাত্রীদের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, হলে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে এবং জরুরী ভিত্তিতে শনিবারের মধ্যেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন করা হবে।
ঊষার আলো-এসএ