ঊষার আলো ডেস্ক: ইসরাইলের নিরাপত্তা ও যুদ্ধমন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ পশ্চিম তীরের ইসরাইলি সেটলারদের ওপর প্রশাসনিক আটকাদেশের প্রয়োগ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এবং অধিকার সংগঠনগুলো তার এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রশাসনিক আটকাদেশ কী?
প্রশাসনিক আটকাদেশ হলো এমন একটি নীতি- যে নীতিতে কোনো ব্যক্তিকে বিনা অভিযোগে ছয় মাস পর্যন্ত আটক রাখা হয় এবং এই মেয়াদ বারবার বাড়ানোও যায়।
মূলত এটি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধেই প্রয়োগ করা হয়। তবে কখনো কখনো চরমপন্থি ইসরাইলি সেটলারদের বিরুদ্ধেও এটি প্রয়োগ করা হয়েছে।
কাৎজ বলেছেন, ‘যদি কোনো অপরাধের সন্দেহ থাকে, তাহলে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। অন্যথায়, প্রশাসনিক আটক ছাড়া প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব’।
তিনি বলেন, ‘ইহুদি সেটলারদের প্রতি আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও ফিলিস্তিনি চরমপন্থিদের মধ্যে এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া অনুচিত।
নীতির সমালোচনা ও প্রশংসা
কাৎজের এই সিদ্ধান্তটি ইসরাইলের ডানপন্থি নেতাদের মধ্যে প্রশংসিত হলেও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এর সমালোচনা করেছে।
ডানপন্থি নেতাদের প্রতিক্রিয়া
ইতামার বেন গভির কাৎজের এই পদক্ষেপকে ‘সঠিক বিচার’ বলে অভিহিত করেছেন।
ইসরাইলের আরেক নেতা বেজালেল স্মোট্রিচ এই সিদ্ধান্তকে ‘সেটলারদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
আরেক নেতা লিকুদ এমকে অভিচাই বোয়ারন এটিকে ‘সেটলারদের প্রতি সহানুভূতিশীল নতুন মনোভাব’ বলে উল্লেখ করেছেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনা
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলেছে, প্রশাসনিক আটক ব্যবস্থাটি ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনিদের ওপর ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের এই নীতির মাধ্যমে আটক ফিলিস্তিনিদের ওপর অত্যাচার, যৌন হয়রানি এবং চরম অবমাননাকর আচরণ করা হয়।
ইসরাইলের এই নীতির আওতায় গাজায় ইসরাইলি অভিযান শুরুর পর থেকে প্রায় ১১,৭০০ ফিলিস্তিনি আটক হয়েছেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘন
ইসরাইলের প্রশাসনিক আটক ব্যবস্থাকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো ‘বিচারবহির্ভূত নির্যাতন এবং বৈষম্যমূলক আচরণ’ বলে অভিহিত করেছে। বিশেষ করে, ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনা অভিযোগে আটক রাখা এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
তবে, ইসরাইল গাজা থেকে আটক ফিলিস্তিনিদের তথ্য প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরাইলের এই পদক্ষেপটি সেটলারদের সহিংসতায় আরও উসকানি দেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এবং অধিকার সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।
ঊষার আলো-এসএ