ঊষার আলো ডেস্ক : প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আরো ঘনীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হয়। আর সন্ধ্যা নাগাদ সেটি ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হয়। ঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৬৪ কিলোমিটার।
‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হয়ে ভারতের ওড়িশার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার (২৬ মে) দুপুর নাগাদ ‘ইয়াস’ ওড়িশা রাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে। জোয়ারের পানির উচ্চতা বেশি হবার কারণে ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছে উপকূলবাসী। বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইয়াস সম্পর্কিত ১৩ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩৫ কিলোমিটার দণিপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০৫ কিলোমিটার দণিপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯০ কিলোমিটার দণি-দণিপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯০ কিলোমিটার দণি-দণিপশ্চিমে অবস্থান করছিল। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই বিুব্ধ রয়েছে।
বুলেটিনে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উড়িষ্যার দিকে যাবে বলে ধারণা করা হলেও তার বহির্ভাগের কিছু প্রভাব বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোয় পড়বে। আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড়টি ৬০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ নিয়ে তৈরি হয়েছে। ঝড়ের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী, বুধবার দুপুরে সেটি ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সেই সময়েও খুলনা ও আশেপাশের এলাকায় আউটার সাইডের প্রভাব থেকে যাবে। এ সময় সেসব এলাকায় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার।
পূর্ণিমা থাকায় উপকূলীয় অঞ্চলগুলোয় জোয়ারের পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। ঝড়ের কারণে সারাদেশে বৃষ্টিপাত হবে। খুলনা, সাতীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চলগুলোয় স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে চার ফুট বেশি উচ্চতার পানিতে প্লাবিত হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।