ঊষার আলো রিপোর্ট: উচ্চ গতিতে বাস চালাতে নিষেধ করায় ইমাদ পরিবহনের বাসের স্টাফদের হামলার শিকার হয়েছেন খুলনা মহানগর দায়রা জজ শরিফ হায়দারের ড্রাইভার মো: আজাদ রহমান ও গান ম্যান রাকিব। এসময় জজ দ্রুত সরকারি গাড়িতে উঠে গেলে বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার মিলে তার গাড়িতেও হামলা চালায়।
এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাসের ড্রাইভার, হেলপার ও সুপারভাইজারসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো: লবনচরা ফাতেমা বাগ এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ মহসিন আলম, হাসনাবাদ চরা এলাকার মৃত সিরাজ মোল্লার ছেলে মো: শামসুর রহমান বাবু, কয়রা বামিয়া এলাকার মো: রহমত মোল্লার ছেলে মো: রেজাউল মোল্লা, মদিনা নগর এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে আরমান হোসেন ওরফে সালাউদ্দিন, বরগুনা আমতলী এলাকার খোকন হাওলাদারের ছেলে আল আমিন হাওলাদার, ডুমুরিয়া গুটুদিয়ার আবুল কাশেম সরদারের ছেলে আরিফুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ খাঘাইল এলাকার সিরাজুল ইসলাম মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া, বরগুনা বেতাগার মো: কাজলের ছেলে মো: শাকিল।
হামলার ঘটনায় মহানগর দায়রা জজ আদালতের ড্রাইভার মো: আজাদ রহমান বাদী হয়ে দু’জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামী করে আাদালতে এজাহার দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৭, তারিখ: ২৪/০৩/২০২৪ইং।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ মার্চ সকালে ইমাদ পরিবহণের একটি নন এসসি বাসে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৪৬৮৪) করে ঢাকা থেকে খুলনায় আসেন খুলনা মহানগর দায়রা জজ। বাসটি দ্রুত চালাতে নিষেধ করেন বিচারক। কিন্তু তার কথা অমান্য করেন চালক। এরপর খুলনা জিরো পয়েন্টে তিনি বাস থেকে নেমে তাকে নিতে আসা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ড্রাইভার আজাদ রহমানকে বলেন, “এ বাসের ড্রাইভার ১২০ কিলোমিটারের অধিক গতিতে গাড়ী চালাচ্ছে, মাঝে মাঝে স্টিয়ারিংয়ে হাত না রেখেই গাড়ী চালনা করছে সেই ঢাকা থেকে, যা যাত্রীদের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। আমিসহ অন্যান্য যাত্রীরা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু তা কোন কাজে আসেনি। তোমরা ট্রাফিক পুলিশকে বলে এই ড্রাইভারকে পরিবর্তনের ব্যবস্থা কর।”
এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে গাড়ীর ড্রাইভার আল আমিন হাওলাদার, সুপারভাইজার মহসিনসহ জিরো পয়েন্ট ইমাদ পরিবহন কাউন্টারের লোকজন মহানগর দায়রা জজ আদালতের ড্রাইভার ও তার সহযোগীর ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত মহানগর দায়রা জজকে সরকারি গাড়ীতে উঠিয়ে দরজা জানালার লক করে দেয়। অভিযুক্ত আসামীরা সরকারি গাড়ির জানালা ও দরজায় আঘাত করে। এছাড়াও আসামীরা বাদীকে কিল ঘুষি মারে ও তার কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় বিচারকের গানম্যান রাকিব ইউনিফর্ম পড়া থাকলেও তার ওপরও হামলা চালায় আসামীরা।
ইমাদ পরিবহনের ব্যবস্থাপক শেখ রেজাইল করিম বাসু জানান, গত বছর ১৯ মার্চ মাদারীপুরে আমাদের একটি বাস দুর্ঘটনার পর প্রতি ১৫ দিন অন্তর আমরা গাড়ির স্টাফদের নিয়ে সভা করে তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে আসছি। অতিরিক্ত গতিতে যেন গাড়ি না চালানো হয় এজন্য আমরা তাদের নিষেধ করেছি। ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই দিন কিছু যাত্রী গাড়ি দ্রুত চালাতে বলেন এবং কিছু যাত্রী গাড়ী ধিরে চালাতে বলেন। এনিয়ে অনেকের সাথে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন স্টাফরা। পরে বাসটি জিরোপয়েন্টে আসলে জজ সাহেবের চালক বাসের ড্রাইভারকে মারধর করেন। এতে স্থানীয় মটর শ্রমিকরা ভুল করে তাদের ওপর চড়াও হয়।
লচনচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক জানান, এঘটনায় আট জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত শুনানী শেষে তাদের জেল হাজতে প্রেরন করেছেন।
ঊআ/বিএস