UsharAlo logo
শনিবার, ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবসে ঢাকায় মুক্তির উৎসব

koushikkln
ডিসেম্বর ৯, ২০২২ ১০:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী নতুন প্রজন্মই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে বলে মনে করেন রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্যরা। তারা বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে। এই বিভ্রান্তি দূর করতে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নগুলো ছড়িয়ে দিতে হবে। আর এজন্য সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মুক্তির উৎসবে তারা এ সব কথা বলেন। ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা (নৌ কমা-ার) ও সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবুল খায়ের, বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র, উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আলীম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক সানজিদুল হাসান, ঢাকাস্থ পাইকগাছা সমিতির জাহাঙ্গীর আলম, পাইকগাছা সাংস্কৃতিক জোটের নিউটন রায় প্রমূখ।

সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে ৫০ বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আমরা নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি। যে কারণে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটেছে। এই দেশকে রাজাকার মুক্ত করে যদি না যেতে পারি তাহলে আগামী প্রজন্মের জন্য বিপর্যয় নেমে আসবে। তাই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, কপিলমুনি যুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ চলছে। সকলের প্রচেষ্টায় এ সকল উদ্যোগ সফল হবে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, দেশের অন্যতম যুদ্ধক্ষেত্র কপিলমুনিতে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য বাজেট বরাদ্দ প্রদান ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি। খাসজমির দখলদার ও প্রভাবশালীদের ইশারায় আটকে আছে সরকারের এই মহতি উদ্যোগ। বীরাঙ্গনা গুরুদাসির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হলেও তার স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়েছে কপিলমুনি পৌরসভা গঠনের কাজ। মাঝপথে আটকে আছে কপিলমুনি-কানাইদিয়া সেতু নির্মাণ কাজ। এ সকল বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীণ কপিলমুনি বাজারে রায়সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর সুরম্য বাড়িটি দখল করে রাজাকাররা সেখানে শক্ত ঘাঁটি স্থাপন করেছিল। টানা চার দিনের যুদ্ধ শেষে ৯ ডিসেম্বর রাজাকাররা আত্মসমার্পনে বাধ্য হয়। যুদ্ধ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধারা আটক করেন ১৫৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে। এরপর পাশ্ববর্তী কপিলমুনি হাই স্কুল মাঠেই বসে জনতার আদালত। গণআদালতের রায় মৃত্যুদন্ড প্রকাশ্যে কার্যকর করা হয় ১৫১ জন রাজাকারের। মুক্তিযুদ্ধকালে গণআদালতের রায়ের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি দেওয়া কপিলমুনির ঘটনাটিই একমাত্র উদাহরণ। ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবস গত বছর ২০২০ সাল থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন শুরু হয়। এ উপলক্ষে ঢাকা ছাড়াও কপিলমুনিসহ বিভিন্ন স্থানে নানান কর্মসূচী পালিত হয়েছে।