UsharAlo logo
সোমবার, ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘কালা পাহাড়’ ‘ধলা পাহাড়’: একটি ইতিহাসের পরিসমাপ্তি

ঊষার আলো রিপোর্ট
ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫ ৪:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রাচীন ঐতিহ্যের সাক্ষী বাগেরহাটের হজরত খান জাহান আলীর (র.) মাজার। মাজার সংলগ্ন বড় দিঘিটি এখানে আগত যেকোনো দর্শনার্থীর নজর কাড়ে। দিঘিতে শতবর্ষী ‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ নামে দুটি কুমির ছিল। কুমির দুটির সঙ্গে আষ্ঠেপিষ্টে জড়িয়ে ছিল ছয় শতাব্দীব্যাপী এক ইতিহাস।

২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার করা হয় শতবর্ষী ‘ধলা পাহাড়’ নামের কুমিরটির মরদেহ। এর আগে ২০০৬ সালে ‘কালা পাহাড়’ কুমিরেরও মৃত্যু হয়। ধলা পাহাড়ের মৃত্যুর সঙ্গেই পরিসমাপ্তি ঘটে মিঠা পানির কুমির যুগল ‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ এর ছয়শ বছরের ইতিহাসের।

তৎকালীন খলিফাতাবাদ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা হযরত খানজাহান আলী এবং তার পরবর্তী ইতিহাস ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল এই কুমির দুটি।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ভারতবর্ষে সুলতানী শাসন আমলে হযরত খান জাহান (র.) ১৪ শতকের প্রথম দিকে বাগেরহাটে ‘খলিফাতাবাদ’ নামক  এক নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে খান জাহান (র.)-এর মাজার সংলগ্ন এই স্থানে তিনি একটি দিঘিও খনন করেন।

১৯১৪ সালে প্রকাশিত সতীশ চন্দ্র মিত্রের লেখা ‘যশোহর খুলনার ইতিহাস’ গ্রন্থে উল্লেখ, বর্তমান দিঘিটির স্থানে পুরাতন বৌদ্ধ আমলে উত্তর-দক্ষিণে একটি ছোট পুকুর ছিল। খান জাহান আলী সেই স্থানে বিশাল এক দিঘি খনন করেন। যার দৈর্ঘ্য-প্রস্ত প্রায় ১৬০০ ফুট করে।

এই দিঘির উত্তর দিকে ৬০ ফুট প্রশস্ত একটি শান বাঁধানো ঘাট (সিড়ি) আছে। এই ঘাটের ওপরে পাড়ের অংশেই রয়েছে খান জাহান (র.)-এর মাজার বা সমাধি।

‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ নামকরণ 

অনেকেই মনে করেন ‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ নিছক দুটি কুমিরের নাম। আসলে বিষয়টা তা নয়।

সতীশ চন্দ্র মিত্রের ওই ইতিহাস গ্রন্থ অনুসারে, খান জাহান আলী তার এই দিঘিতে ‘কালা পাহাড়’ (পুরুষ) ও ‘ধলা পাহাড়’ (নারী) নামে দুটি কুমির ছেড়ে তাদের লালল-পালন করতেন। নিকটবর্তী নদী বা বিল থেকে কুমির দুটিকে দিঘিতে আনা হতে পারে বা আসতে পারে বলে অনুমান করা হয় ওই গ্রন্থে।

খান জাহান আলীর খনন করা ঘোড়া দিঘি, কোদাল ধোয়া দিঘিসহ অন্যান্য দিঘিতেও কুমির থাকার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে ওই বইতে।

ঐতিহাসিকদের মতে, খান-উল-আলম উলুঘ খান-ই-জাহান এই দিঘিতে তার পোষা ‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ নামে মিঠা পানির প্রজাতির কুমির দুটিকে নিয়মিত খাবার দিতেন এবং কুমির দুটিও তার হাত থেকে খাবার খেতো।

খান জাহানের মৃত্যুর পরও মাজারের খাদেম ও ভক্তরা এই কুমির দুটিকে নিয়মিত খাবার দিতেন। ক্রমেই এই কুমির যুগল বংশ বিস্তার করে এবং বিগত ৬০০ বছর ধরে বংশানুক্রমে তারা এই দিঘিতে উন্মুক্ত পরিবেশে বসবাস করে আসছিল।

ধীরে ধীরে একটা সময় এই কুমির হজরত খান জাহান (র.)-এর ভক্ত অনুরাগীদের বিশ্বাস ও অনুভূতির প্রতীকে পরিণত হয়। এরা হয়ে ওঠে এই মাজার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ বলে ডাক দিলে এখানকার কুমিররা ছুটে এসে ভক্তদের আনা মুরগি খেয়ে তাদের মন আর চোখ জুড়িয়ে রাখত। মাজারের অন্যতম আকর্ষণ ছিল এই কুমির।

দিঘির বিশেষত্ব 

উলুঘ খান-ই-জাহান বা  খান জাহান আলী ছিলেন সুলতানি আমলের একজন শাসক, ইসলাম প্রচারক ও সমাজ সংস্কারক। তুর্কি বংশদ্ভূত খান জাহান আলী ৭৭৩ হিজরী বা ১৩৬৯ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমান বরিশাল, যশোর, ঝিনাইদাহ, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট তথা এই অঞ্চলের শাসনকর্তা ছিলেন খান জাহান। বিশাল এই অঞ্চলের শাসনকার্য পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম ছিল খলিফাতাবাদ। আর এই রাজ্যের রাজধানী ছিল বাগেরহাটের সুন্দরঘোনা গ্রামে।

খান জাহান আলী তার খলিফাতাবাদ রাজ্য পরিচালনার সময়ে এই অঞ্চলজুড়ে ৩৬০টি মসজিদ, সুপেয় পানির জন্য শত শত দিঘি, রাস্তাঘাট ও বাজার নির্মাণ করেছিলেন। ন্যায়পরায়ণ শাসক ও ধর্মপ্রচারক হযরত খান জাহান আলী ১৪৫৯ সালের ২৫ অক্টোবর (৮৬৩ হিজরীর ২৬ জিলহজ) মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর ১০ বছর আগে ১৪৫০ সালে খান জাহান আলী বাগেরহাটে একটি দিঘি খনন করেন। এটি খনন করতে অসংখ্য দিনমজুর এবং প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়।দিঘিটি দেখতে ছিল চৌকণা বিশিষ্ট। প্রতিদিকের মাপ কমবেশি ১৬৫০ ফুট। দিঘির চারপাশে ছিল চারটি বাধানো ঘাট।তবে বর্তমানে তার দরগা সংলগ্ন উত্তর দিকের সিঁড়ি বাধানো ঘাটটিই দৃশ্যমান। এই দিঘির পানি স্বচ্ছ সুপেয়।

কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড় ঘিরে লোককথা

খান জাহান আলী তার খনন করা এই দিঘিতে দুটি মিঠাপানির  কুমির অবমুক্ত করেন।তিনি তাদের নাম দেন কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড়।খননের পর থেকে এ দিঘিতে বংশ-পরম্পরায়  শত শত বছর  ধরে কুমির বসবাস করে আসছিল।

কথিত আছে, খান জাহান আলী তার কুমির দুটিকে নাম ধরে ডাকতেন, আর তারা দিঘি থেকে পাড়ে চলে আসতো।পরবর্তীতে মাজারের খাদেমরাও দিঘির কুমিরদের ডাকলে তারা পাড়ে চলে আসতো।মাজারে আসা ভক্তরা হাঁস-মুরগি এনে খাদেমদের মাধ্যমে কুমিরকে খাওয়াতো।

দিঘির এই কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড় সম্পর্কে বিভিন্ন উপকথা প্রচলিত আছে। অনেকে বলেন, দিঘিটির খনন কাজে খান জাহান আলী অলৌকিক ক্ষমতাবলে সেই সময়ে অসংখ্য জিনকে নিয়োজিত করেন। কিছু জিন অবাধ্য হলে দুটো জিনকে শাস্তিস্বরূপ কুমিরে পরিণত করা হয় বলে প্রচলিত তথ্য রয়েছে।

আবার অন্য একটি মতে, খান জাহান আলীর ঘোড়া দুটি কুমিরে পরিণত হয়। তবে অধিকাংশের ধারণা, খান জাহান আলী তার এই দিঘির পানি কেউ যাতে নোংরা করতে না পারে, সেজন্য সুন্দরবন থেকে দুটো কুমির ধরে এনে এ দিঘিতে ছেড়ে দেন। আর আদর করে কালো পুরুষ কুমিরটিকে ডাকতেন কালাপাহাড় আর সাদা মাদি কুমিরটিকে ডাকতেন ধলাপাহাড়।

শত শত বছর ধরে এ দিঘিতে কুমির বসবাস করলেও কখনো এই কুমিরের বংশধররা মানুষকে আক্রমণ করেনি। কথিত আছে, কুমিরকে স্পর্শ করে কিছু আকাঙ্ক্ষা করলে নাকি তার আশা পূরণ হতো। মাজারের খাদেমরা ভিন্ন সরে নাম ধরে ডাকলে কাছে আসতো, গায়ে হাত দেওয়া যেতো। হিংস্র প্রাণীও যে এমন অনুগত হয়, তা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। তবে ২০০৫ সালের ২৫ জুন খান জাহান আলী দিঘিতে ভারতের মাদ্রাজ থেকে আনা ৬টি  কুমির অবমুক্তির পর সেই কুমিরগুলো মানুষকে আক্রমণ শুরু করে।

দিঘিতে থাকা কালাপাহাড় ও ধালাপাহাড় বৃদ্ধ হওয়ায় বেশ কয়েক বছর ধরে প্রজননহীন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় মিঠা পানির কুমিরের বিলুপ্তি ঠেকাতে সরকার ২০০৫ সালে ভারতের মাদ্রাজ থেকে আনা চারটি স্ত্রী ও দুটি পুরুষ কুমির এই দিঘিতে ছাড়ে। কুমির সাধারণত ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে প্রজনন ক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে। এ অবস্থায় মাদ্রাজ থেকে আনা পূর্ণবয়স্ক পুরুষ কুমিরের সঙ্গে প্রজননকে কেন্দ্র করে বৃদ্ধ কুমির কালাপাহাড়ের সংঘর্ষ হয়। বয়সে বৃদ্ধ হওয়ায় কালাপাহাড় জখম হয় এবং তার ওপরের চোয়াল মাথা থেকে আলাদা হয়ে যায়। ওই সময়ে আঘাতপ্রাপ্ত কুমির কালাপাহাড়কে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুমির বিশেষজ্ঞ আব্দুর রব চিকিৎসা দেন।

কিন্তু ২০০৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খান জাহান আলীর আমলের এই কুমির চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। কালাপাহাড়ের মৃত্যুর খবর শুনে অসংখ্য মানুষ দিঘির পাড়ে ছুটে আসে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মইনুদ্দীন ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত কুমিরের চামড়া সংরক্ষণ করে মসজিদ সংলগ্ন বাগেরহাট জাদুঘরে রাখার নির্দেশ দেন।

এদিকে শত শত বছর থেকে একসঙ্গে থাকা কুমির ধলাপাহাড় সঙ্গীহীন হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ভারতের মাদ্রাজ থেকে আনা ৬টি কুমিরের সঙ্গে তার কোনো বনীবনাই হচ্ছিল না। ২০১৫ সালে খানজাহান আমলের কুমিরের মধ্যে একমাত্র বেঁচে থাকা ধলাপাহাড়ও মারা যায়।

অন্যদিকে মাদ্রাজ থেকে আনা সেই ৬টি কুমিরের দুটি কুমির আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায়। আরও দুটি কুমিরকে সুন্দরবনের করমজল প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বাকি দুটি কুমির এই দিঘিতে থেকে বড় হয়ে ডিম দিলেও এখনো কোনো বাচ্চা ফোটেনি। এরই মধ্যে ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর দিঘিতে থাকা দুটি মাদ্রাজি কুমিরের একটি মারা যায়।

স্থানীয়রা ওইদিন দুপুরের দিকে দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে পুরুষ (বড়) কুমিরটির মরদেহ ভাসতে দেখেন। পরে প্রশাসনের নির্দেশে সন্ধ্যায় কুমিরটির মরদেহ দিঘি থেকে তুলে ময়নাতদন্ত শেষে মাটিচাপা দেওয়া হয়।

এই কুমিরের মৃত্যু নিয়ে বাগেরহাটে রীতিমত হইচই পড়ে যায়। অনেকে অভিযোগ করতে থাকেন, মাজারের সঙ্গবদ্ধ চক্র কুমিরকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে ব্যবসা করার কারণে তাদের সঙ্গে অত্যাচারের ফলে কুমিরটির মৃত্যু হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, খানজাহানের মাজার ঘিরে দিঘির পাড়ে অসংখ্য বসতি গড়ে উঠেছে।যেগুলোতে মাজারের ফকিররাই বাস করছেন। জানা যায়, মাজারে আসা দর্শনার্থীদের থেকে টাকা-পয়সা উপার্জন করতে এই ফকিররা মাজারের কুমিরকে তাদের বাড়ির ঘাটে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে ঘুম পড়িয়ে রাখত। দেশি-বিদেশি ভক্ত-অনুসারীরা দিঘির কুমির দেখতে ও গা ছুঁয়ে দেখতে ওই সব ফকিরের বাড়িতে ভিড় করতেন। কুমির নিয়ে তাদের এ ধরনের ব্যবসা করার ফলে কুমিরটির মৃত্যু হতে পারে বলে তাদের ধারণা।এ অবস্থায় ঐতিহাসিক খানজাহান আলীর মাজার সংলগ্ন দিঘিতে মাত্র একটি কুমির রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খান জাহান আলী মাজার সংলগ্ন পাঠরপাড়া গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক জানান, কুমিরগুলোই ছিল মাজারের প্রাণ। বংশপরম্পরায় এ দিঘিতে খান জাহান আমলের কুমির বসবাস করে আসছিল। মাজারের পাড়ে বসতি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ তার প্রয়োজনে দিঘিতে মাছ ধরার জন্য ফাঁস জাল পেতে রাখত। অনেক সময় কুমিরের বাচ্চা এই ফাঁস জালে আটকা পড়ে মারা গেছে।প্রাচীনতম এই দিঘির কুমির ধ্বংসের অন্যতম কারণ এই ফাঁস জাল। বড় কুমির ফাঁস জাল ছিড়ে বের হতে পারলেও ছোট কুমিরগুলো তা পারত না। এছাড়া কুমির দিয়ে এখনো টাকা উপার্জন করা হয়। এটা বন্ধ করা দরকার। কুমির সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে এক জায়গায় থাকে না, আর তাই কুমিরের খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নিজের বাড়ির ঘাটে জোর করে আটকে রাখা হয়।

মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকিরের ভাষ্য, কুমির আটকে রেখে মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেওয়া হতো, যা কুমিরের স্বাভাবিক আচরণের পরিপন্থি। তিনি এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগও করেছেন।

বর্তমানে দিঘিটিতে মাত্র একটি কুমির জীবিত থাকায় ঐতিহ্যবাহী এই দিঘির কুমির সংরক্ষণ ও বংশবিস্তারের বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞমহল।

‘ধলা পাহাড়’কে সংরক্ষণের উদ্যোগ 

এদিকে ২০০৬ সালে মৃত ‘কালা পাহাড়’ কুমিরটির চামড়া প্রক্রিয়াকরণ করে ষাটগম্বুজ মসজিদ সংলগ্ন যাদুঘরে দর্শনার্থীদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। সর্বশেষ ঐতিহ্য ‘ধলা পাহাড়’কেও সংরক্ষণ করেছে প্রশাসন।

বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ ও যাদুঘরের কিউরেটর মো. গোলাম ফেরদৌস বলেন, খলিফাতাবাদ নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও খানজাহান পরবর্তী ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে মাজারের দিঘির কুমিরযুগল ‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্ম বংশানুক্রমে ইতিহাসের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। এই কুমির ছিল বাগেরহাটের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ।

তাই জেলা প্রশাসন ও সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের সহযোগিতায় আমরা কুমিরদুটির চামড়া প্রক্রিয়াকরণের পর স্টাফড করে আমাদের যাদুঘরে দর্শনার্থীদের জন্য সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেই সঙ্গে আমরা এদের কঙ্কালদুটিও প্রক্রিয়াকরণের জন্য চেষ্টা করছি।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক জানান, আগামী প্রজন্মের কাছে খান জাহানের দিঘির কুমিরের পরিচয় করিয়ে দিতে কঙ্কাল ও চামড়া ষাটগম্বুজ জাদুঘরে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানান, হযরত খান জাহান আলী দিঘির এই কুমির দেশে বিদেশে মানুষের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত। এটি বিরল প্রজাতির মিঠা পানির কুমির।তাই আমরা এই কুমিরের দেহাবশেষ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছি।

ঊষার আলো-এসএ