খুলনা জেলার তেরখাদায় গৃহবধূকে হত্যা করে কলাবাগানে ফেলে রাখার ঘটনায় নড়াইল থেকে ৩ আসামিকে গ্রেফতার করেছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলো রনিচ সরদার (৪০), আঙ্গুরা বেগম (৩০) এবং আকছির সরদার (৫৫। গত ২৩ মার্চ নড়াইল জেলার কালিয়া থানা এলাকা হতে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছেন।
সোমবার খুলনা পুলিশ সুপার দপ্তর থেকে এক মেইল বার্তায় জানানো হয়, খুলনা জেলার তেরখাদায় গৃহবধূকে হত্যা করে কলাবাগানে ফেলে রাখার ঘটনায় খুলনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ হাফিজুর রহমান এর নেতৃত্বে তেরখাদা থানা পুলিশের একটি চৌকশ দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে উক্ত এলাকা থেকে রনিচ সরদার, আঙ্গুরা বেগম এবং আকছির সরদার।
তেরখাদা থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২০০৮ সালে মোসাঃ সাকিরন বেগমের (৪৫) স্বামী মৃত্যুবরণ করলে ভিকটিম তার তিন সন্তানকে নিয়ে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানাধীন বয়রায় তার ভাইয়ের বাসায় চলে আসে। খুলনায় থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালে আনিচ সরদার এর সাথে সাকিরন বেগমের পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। উক্ত সম্পর্কের প্রেক্ষিতে গত ২০১৮ সালে আনিচ সরদারের সাথে মোসাঃ সাকিরন বেগম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের একপর্যায়ে আনিচ সরদার সাকিরন বেগম সৌদি আরবে পাঠানোর প্রলোভন দেখায়। সাকিরন বেগম আনিচ সরদারের কথায় রাজি হয়ে তার গচ্ছিত টাকা দিয়ে ২০১৯ সালে সৌদি আরবে যায় এবং সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় আনিচ সরদারকে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রেরণ করে। পরবর্তীতে গত ২০২০ সালে ভিকটিম মোসাঃ সাকিরন বেগম দেশে ফিরে আসে এবং জানতে পারে আনিচ সরদার গ্রেফতারকৃত আঙ্গুরা বেগমকে বিবাহ করেছে। সাকিরন বেগম আনিচ সরদার নিকট স্ত্রীর মর্যাদা দাবী করলে আনিচ সরদারসহ গ্রেফতারকৃতরা তাকে অস্বীকার করে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। বিষয়টি সাকিরনের তার ভাইসহ স্থানীয় লোকজনদের জানালে তাদের মধ্যস্থতায় আনিচ সরদার গত ১ ফেব্রুয়ারি সাকিরন বেগমকে তিন লক্ষ টাকা ফেরত দেবে মর্মে অঙ্গীকার করে। এর প্রেক্ষিত গত ২২ মার্চ বিকালে েিমাসাঃ সাকিরন বেগম টাকা নেওয়ার জন্য নড়াইল জেলার কালিয়া থানায় আনিচ সরদারের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। একই তারিখ রাতে ভিকটিমের মেয়ে তানজিলা আক্তারকে আনিচ সরদার ফোন করে জানায় যে, তার মা মোসাঃ সাকিরন বেগম টাকা চাইতে ও স্ত্রীর মর্যাদা দাবী করতে তার কাছে গেছে এর ফলে সাকিরনকে আনিচের ভাই, মা, স্ত্রী ও শ্বশুর সহ সকলে মারপিট করিয়া অজ্ঞান করে রাখছে। তাকে এসে না নিয়ে গেলে তারা সাকিরনকে খুন করে ফেলবে। তার পর হতে সাকিরন বেগমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং গত ২৩ মার্চ সকালে খুলনা জেলার তেরখাদা থানাধীন বিজয়নগর গ্রামের একটি কলাবাগনে ভিকটিমের মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় তেরখাদা থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ঊআ-বিএস