খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে অপসারণসহ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে চলছে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি।অধ্যক্ষকে অপসারণপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মহাপরিচালককে লিখিত আবেদন।
পুলিশ কমিশনারের কাছে দাবি সম্বলিত লিখিত অভিযোগ প্রদান
খুলনার আড়ংঘাটা থানাধীন তেলিগাতী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম কে অপসারণ এবং তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগের তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে পালিত হলো অনির্দিষ্টকালের জন্য শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি।
১০ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ৮টা থেকে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ভবনের সামনে দাবি সম্বলিত ব্যাপার নিয়ে দাঁড়িয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারী ও প্রশিক্ষণার্থীরা। দ্বিতীয় দিন কর্মসূচি পালনকালে আন্দোলনকারীরা প্রতিষ্ঠানের ৪৭ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর গণ স্বাক্ষরকৃত একটি লিখিত অভিযোগ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের নিকট প্রেরণ করেছেন। একই সাথে প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র চারজন শিক্ষকের একটি প্রতিনিধি দল খূলনা পুলিশ কমিশনারের সাথে দেখা করে দাবি সম্বলিত তাদের লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছেন। এ দিকে আন্দোলনমুখে গত দুই দিন যাবত প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে পারেননি। শিক্ষক ও কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণার্থীরকেও গতকাল অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।
গণ স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম-দূনীতি-স্বেচ্ছাচারিতা, সরকারি সম্পদ নষ্ট, অধীনদের শারীরিক ও মানসিকভাবে লঞ্চিত করা, প্রশিক্ষণার্থীদের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা, প্রশিক্ষণের কাঁচামাল আত্মসাৎ, দীর্ঘদিন প্রশিক্ষকদের সম্মানী প্রদান না করা, অধীনদের বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজসহ হুমকি-ধামকি প্রদান, নারী কেলেঙ্কারীসহ গুরুতর সব অপরাধ করে আসছে। লিখিত অভিযোগ তারা জানায় দীর্ঘ ২৩ মাস যাবৎ পি ডি ও সম্মানী প্রদান না করে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে ব্যক্তিগত কাজে খরচ করেছেন। প্রশিক্ষণের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে খুলনা, যশোর, গোপালগঞ্জ, বরগুনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেট থেকে তেল খরচ করে, এছাড়া প্রশিক্ষণার্থীদের কাঁচামালের অর্থ আত্মসাৎ করায় প্রশিক্ষণার্থীদের কাঙ্ক্ষিত প্রশিক্ষণের ব্যাহত হয়েছে। অধ্যক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের একজন নারী গেস্ট টেইনারের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরা হয়েছে লিখিত অভিযোগে। বিদেশে সব থেকে চাহিদা সম্পন্ন ট্রেড ওয়েল্ডিং শপটি অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। লিখিত অভিযোগে তারা জানান, অধ্যক্ষ তার সকল অপকর্ম ধামাচাপা দিতে সার্বক্ষণিক সন্ত্রাসীমুলক আচার-আচরণ, গালিগালাজ ও মারধরের মাতো ঘটনাসহ অধিনস্তদেরকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করে আসছে। অধ্যক্ষের রিবুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও যাবতীয় রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ড সুষ্ঠভাবে পালন না করার গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে।
বর্তমান সরকারের ভিষন ও মিশন বাস্তবায়নের পথে এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম অন্তরায় হয়ে দাঁড়ানোর জন্য অবিলম্বে তাকে অপসারণ সহ তার বিরুদ্ধে উঠে আসে সকল অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গত ৭/১২/২০২৩ তারিখ থেকে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ অনির্দিষ্টকালের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে।
এদিকে ১০ ডিসেম্বর সকাল ৮ টা থেকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে দাবি সম্বলিত প্যানা ঝুলিয়ে প্রধান ফটক বন্ধ করে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাদের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি পালন করেছেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ইন্সেটেক্টর সৈয়দ কামাল আহমেদ, মাসুদুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, মারুফ আহমেদ, হযরত্ আলীসহ সিনিয়র শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বক্তৃতা করেন। সকাল ১১টায় প্রতিষ্ঠানের চার সদস্যের একটি শিক্ষক প্রতিনিধি দল খুলনা পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে বিষয়টি অবহিত করে দাবি সম্বলিত লিখিত অবিযোগ পেশ করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জরুরি কাজে ডিসি অফিসে আছি। আমি অফিসে এসে কথা বলবো। তার সাথে কথা বলতে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে বেলা ৩টা পর্যন্ত বসে থেকেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তাকে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেনি।