UsharAlo logo
রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজায় ৯০ শতাংশ যুদ্ধবিরতি আলোচনা সম্পন্ন: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা

usharalodesk
ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ ১২:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক :  গত ১৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় চলছে ইসরাইলের বর্বর হামলা। নানা মহল থেকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হলেও তাতে খুব একটা সায় নেই ইসরাইলের। তবে এবার ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তার দাবি, গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা প্রায় শেষের পথে। যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে এরইমধ্যে ৯০ শতাংশ আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি প্রশ্নে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে এই চুক্তির আলোচনা ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। তবে মূল বিষয়গুলো এখনো আলোচনার টেবিলেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

এর মধ্যে অন্যতম বিষয় হল ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরাইলি সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত রাখা। মিশর সীমান্তের ওই করিডোরটি কৌশলগতভাবে দক্ষিণ গাজার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

বিবিসি জানিয়েছে, দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনার বিশদ বিবরণ সংবাদমাধ্যমটির কাছে তুলে ধরেছেন ওই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা। এর মধ্যে রয়েছে গাজার সঙ্গে ইসরাইল সীমান্তের দৈর্ঘ্য বরাবর কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত সম্ভাব্য একটি বাফার জোনের প্রস্তাব।

ওই এলাকায় ইসরাইলের সামরিক উপস্থিতি বজায় থাকবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। এসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছালে কয়েক দিনের মধ্যেই তিন ধাপের যুদ্ধবিরতি আলোর মুখ দেখতে পারে।

যুদ্ধবিরতির তিন ধাপের প্রথমটিতে প্রত্যেক নারী সেনার মুক্তির বিপরীতে ২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়ের কথা বলা হয়েছে।

বিবিসি লিখেছে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের নাম নিয়ে এখনও ঐকমত্য হয়নি, তবে ইসরাইলে ২৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে কারাদণ্ড ভোগ করছেন এমন প্রায় ৪০০ জনের মধ্য থেকে তাদের বাছাই করা হবে।

তাদের মধ্যে ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক দল ফাতাহর জ্যেষ্ঠ নেতা মারওয়ান বারঘৌতিও রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যার মুক্তির প্রশ্নে ইসরাইল ভিটো দিতে পারে।

বিবিসি লিখেছে, ইসরাইলি জিম্মিদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে, কারণ কিছু নিখোঁজ জিম্মির হদিস পেতে হামাসের অনুসন্ধানের দরকার বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা, গাজায় ৯৬ জিম্মির মধ্যে ৬২ জন এখনো জীবিত রয়েছে বলে ধরে নিয়েছে ইসরাইল।

ফিলিস্তিনের ওই কর্মকর্তা বলেন, আলোচনা অনুযায়ী- মিশরীয়/কাতারি তত্ত্বাবধানে একটি ব্যবস্থার অধীনে গাজার বেসামরিক নাগরিকরা উত্তর দিকে ফিরে আসতে পারবে এবং প্রতিদিন শ পাঁচেক ট্রাক ওই অঞ্চলে ত্রাণ নিয়ে আসবে।

তিন ধাপের পরিকল্পনার চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৪ মাসের যুদ্ধের অবসান দেখা যাবে, তখন টেকনোক্র্যাটদের একটি কমিটি গাজাকে তত্ত্বাবধান করবে। ওই কমিটিতে তারাই থাকতে পারবে- অতীতে যাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার ইতিহাস নেই এবং যাদের প্রতি ফিলিস্তিনের সব পক্ষের সমর্থন থাকবে।

বিবিসি লিখেছে, যুদ্ধবিরতি প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশর তাদের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ফের শুরু করেছে এবং একটি চুক্তি সম্পাদনে উভয় পক্ষ বৃহত্তর সদিচ্ছার কথা জানিয়েছে।

এর আগে অক্টোবরের মাঝামাঝিতে এক দফা আলোচনা চললেও তা চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। ওই সময় স্বল্পমেয়াদী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল হামাস।

হামাস ও ফিলিস্তিনের অন্য দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠী বলেছে, ইসরাইল যদি ‘নতুন শর্ত আরোপ করা বন্ধ করে’ তাহলেই গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো ‘আগের চেয়ে আরও সহজ’ হবে।

হামাস শনিবার টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে শুক্রবার কায়রোতে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে।

গাজার নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলা চালায়। তাতে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হন হন, আর ২৫১ জনকে অপহরণ করা হয়।

ঊষার আলো-এসএ