ঊষার আলো রিপোর্ট : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পৃথক তিন স্হানে হিংস্র শিয়ালের কামড়ে নারী ও শিশুসহ ৯ জন আহত হয়েছেন। রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত সারে ৮টার মধ্যে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের চর পাঁচুরিয়া এবং পৌরসভার ১ ও ২ নং ওয়ার্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের চর পাচুরিয়া গ্রামের খবির শেখের ছেলে হোসাইন মোল্লা (১৬), পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের নগর রায়ের পাড়ার শ্রীদাম রায়ের ছেলে রতন রায় (৫০), হারুন খার স্ত্রী শারমিন বেগম (৩৫) ও নিরোদ মজুমদারের ছেলে নয়ন মজুমদার (২২)।
এছাড়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের মাষ্টার পাড়ার আহতরা হলেন- শিক্ষক হিরন্ময় কবিরাজের স্ত্রী শিক্ষক নমিতা রানী (৪৫), পলাশ কবিরাজের স্ত্রী স্বাস্থ্য কর্মী চপলা রানী (৩৫), সন্তোষ সূত্রধর (৫৫), দীপালি সরকার (৪২) ও শিশু কনক শীল (৬)।
আহতদেরকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে ।
আহত রতন কুমার রায় বলেন, রোববার সন্ধ্যার দিকে মাঠ থেকে ধান মাগাই করে বস্তা মাথায় বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। এ সময় আচমকা পেছন থেকে এসে একটি শিয়াল তার উপর হামলা করে। তিনি বস্তা ফেলে শিয়ালের সঙ্গে অনেকটা লড়াই করে রেহাই পান। এর পরপরই গ্রামের আরও দুই জনের উপর হামলা করে শেয়াল। তবে শিয়ালটি একই কিনা সেটা বোঝা যায়নি। শিয়ালে কামড়ানোর পরপর চিকিৎসার জন্য তিনি গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নেন। হাসপাতালে নাকি শিয়ালে কামড়ানোর ভ্যাকসিন নাই। তাই বাইরে থেকে চড়া দামে ভ্যাকসিন কিনে দেওয়ার পর নার্সরা সেটা তাকে পুশ করেন।
মাষ্টার পাড়ার বাসিন্দা জয় সূত্রধর, রবি সূত্রধর, শিল্পী আক্তারসহ কয়েকজন বলেন, শিয়ালের উপদ্রবে তারা কয়েকদিন ধরে আতঙ্কে আছেন। রোববার রাত ৮ টার দিকে গ্রামের কয়েকজনকে কামড়ানোর পর সন্তোষ সূত্রধরকে কামড়ানোকালে কাছাকাছি থাকা কয়েকজন শিয়ালটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
এ বিষয়ে পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোশাররফ হোসেন কুটিন, বেশ কিছুদিন ধরে এ এলাকায় শিয়ালের উপদ্রব বেড়ে গেছে। সপ্তাহখানেক আগে দেওয়ান পাড়ার সাদ্দাম দেওয়ানের ৩ বছর বয়সি শিশু কন্যা নাদিয়াকে শিয়াল আক্রমন করে মারাত্মক জখম করে। অল্পের জন্য শিশুটি প্রাণে বেঁচে যায়। এছাড়া ওই গ্রামের মাহিন সরদারের একটি ছাগলকে জখমসহ ছাগলের লেজ কামড়ে ছিড়ে ফেলে। এভাবে শিয়ালের কামড়ে সাধারণ মানুষ ও গবাদি পশু জখম হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য আমরা স্হানীয় প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতা কামনা করছি। সেই সঙ্গে হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. রুহুল আমিন জানান, রোববার সন্ধ্যার পর থেকে রাতে কয়েক দফায় শিয়ালের কামড়ানো রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। আমরা তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেই। কিন্তু এর মূল ওষুধ অ্যান্টি-রেবিস ভ্যাকসিন হাসপাতালে সরবরাহ না থাকায় রোগীদের বাইরের ফার্মেসি হতে আনতে বলি।নিয়ে আসার পর আমরা তাদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করি।
ঊষার আলো-এসএ