ঊষার আলো রিপোর্ট : আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, দেশে বেশ কিছুদিন ধরে গ্যাসের তীব্র সংকট বিরাজ করছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়াই গ্যাস সংকটের কারণ। সোমবার খবরে প্রকাশ-গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এ সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করায় বাসাবাড়িতে যেমন চুলা জ্বলছে না, তেমনি ঘুরছে না শিল্পকারখানার চাকাও। সিএনজি ফিলিং স্টেশনেও গ্যাসের চাপ নেই। গ্যাস নিতে গাড়ির দীর্ঘ লাইন রাজধানীজুড়ে যানজট সৃষ্টি করছে। এদিকে ক্রেতা ধরে রাখতে ভর্তুকি দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় কারখানা চালু রাখছেন শিল্প মালিকরা। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাতারবাড়ীর মহেশখালীতে একটি ভাসমান রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ থাকায় এই সংকট বেড়েছে। এ কারণে ১ জানুয়ারি থেকে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ১০০০ থেকে ১২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। আশার কথা, মহেশখালীর এফএসআরইউ রোববার রাত থেকে চালু হয়েছে। এর ফলে আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
গ্রাহকদের ভোগান্তি হ্রাসে এবং শিল্প রক্ষার স্বার্থে গ্যাস সংকট কাটাতে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। পাশাপাশি এলএনজি আমদানির পরিমাণও প্রয়োজনমাফিক বাড়াতে হবে। সর্বোপরি জ্বালানি খাতে স্মার্ট ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে নিকট ভবিষ্যতে এ সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে না। মনে রাখা দরকার, দেশে ডলার আসার যে কয়টি ক্ষেত্র রয়েছে, তার মধ্যে রপ্তানি বাণিজ্য অন্যতম। রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা যদি গ্যাস সংকটে ভোগে, তাহলে উৎপাদন যেমন ব্যাহত হবে, তেমনি ডলার আয়ের প্রবাহ কমে গেলে এর প্রভাবও দেশের অর্থনীতিতে পড়বে। চাহিদামাফিক উৎপাদিত পণ্য সময়মতো সরবরাহ করতে না পারলে কিংবা পণ্যের গুণগত মান ঠিক না থাকলে বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার কমিয়ে দিতে, এমনকি বাতিলও করতে পারেন, যা অর্থনীতির জন্য কোনোভাবেই মঙ্গলজনক হবে না। সব দিক বিবেচনায় সরকার দ্রুত গ্যাস সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।
ঊষার আলো-এসএ